রবিবার, ১১ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

পবিত্র ঈদুল আজহা

দেশবাসীকে ঈদ মুবারক

পবিত্র ঈদুল আজহা আগামীকাল। মুসলমানদের দুটি প্রধান ধর্মীয় উৎসবের এটি একটি। ঈদুল আজহার অন্যতম অনুষঙ্গ পশু কোরবানি। যার সঙ্গে জড়িত ইমানদারদের আদি পিতা হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও তাঁর পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পবিত্র স্মৃতি। একই সঙ্গে এটি এমন এক উৎসব ও ইবাদত যা মানবজাতির ঐক্য এবং বিশ্বশান্তির পথ দেখাতে পারে। অনুমিত হিসাবে ৪ হাজার ৫০০ বছর আগে সর্বশক্তিমান আল্লাহ হজরত ইব্রাহিম (আ.)-কে তাঁর প্রিয় বস্তু কোরবানির নির্দেশ দেন। আল্লাহর প্রতি সংশয়াতীত আনুগত্যে হজরত ইব্রাহিম (আ.) প্রিয় পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানির সিদ্ধান্ত নেন। আপত্য-স্নেহ যাতে ঐশী নির্দেশ পালনে বাধা হয়ে না দাঁড়ায় তা নিশ্চিত করতে নিজের চোখ বেঁধে প্রিয় পুত্রকে কোরবানির প্রাক্কালে আল্লাহর ইচ্ছায় ইসমাইল (আ.)-এর বদলে একটি দুম্বা কোরবানি হয়। ফেরেশতা হজরত ইব্রাহিমকে জানান, আল্লাহ তাঁর আনুগত্যে সন্তুষ্ট হয়েছেন। আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের এই মহিমান্বিত ঘটনার অনুসরণে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অনুসারীদের মধ্যে ১৪০০ বছর ধরে পালিত হচ্ছে কোরবানির প্রথা। কোরবানি নিছক পশু জবাই নয়; মানুষের মধ্যে লুকিয়ে থাকে যে অহংবোধের হীনমন্যতা, তা বিসর্জন দিয়ে সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি নিবেদিতপ্রাণ হওয়াই কোরবানির শিক্ষা। এ বিষয়ে আল্লাহর ঘোষণা পশুর রক্ত বা মাংস নয়, তাঁর কাছে পৌঁছে বান্দার তাকওয়া। সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের উৎস মহান আল্লাহর নির্দেশা অনুযায়ী জীবন গড়ার মধ্যেই রয়েছে কোরবানির আসল মাহাত্ম্য। তা উপেক্ষা করে কোরবানির নামে অহংবোধের প্রকাশ ঘটালে তা হবে পশু হত্যার নামান্তর। এ মনোভাব ধর্মীয় দৃষ্টিতেও পরিত্যাজ্য। সারা দেশে এখন চলছে ঈদুল আজহার প্রস্তুতি। কোরবানিতে পরিবেশ যাতে দূষিত না হয় সে ব্যাপারে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইমানের অঙ্গ। জবাইকৃত পশুর রক্ত ও বর্জ্যে যাতে পরিবেশ দূষিত না হয় তা নিশ্চিত করা আমাদের ধর্মীয় কর্তব্য। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে আমরা দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহর সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ কামনা করছি। ঈদুল আজহার সঙ্গে মোমিনদের আদি পিতা হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর স্মৃতি জড়িত। বিশ্বের তিনটি প্রধান ধর্মের অনুসারী মুসলমান, খ্রিস্টান ও ইহুদিদের কাছে হজরত ইব্রাহিম (আ.) শ্রদ্ধার পাত্র। সেহেতু হিংসা ও হানাহানিমুক্ত বিশ্ব গড়তে মিল্লাতে ইব্রাহিম (আ.)-এর মধ্যে শান্তি ও সমঝোতার পরিবেশ প্রতিষ্ঠিত হলে তা হবে মানবজাতির জন্য এক বড় অর্জন। এবারের ঈদুল আজহায় আমাদের মধ্যে সেই মানসিকতার প্রকাশ ঘটবে- এমনটিই প্রত্যাশিত। সবাইকে ঈদ মুবারক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর