শিরোনাম
শনিবার, ১৭ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

ইসরায়েলপ্রেমী ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের মর্যাদার জন্য বেমানান

ইসরায়েল তাদের দেশে মার্কিন কংগ্রেসের মুসলিম দুই নারী সদস্যের সফরের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তে ইলহান ওমর ও রাশিদা তালিব নামের দুই কংগ্রেস সদস্য ইসরায়েল সফরের যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনুরোধে। নিজেদের মানবাধিকারের সোল এজেন্ট হিসেবে দাবি করলেও ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের জুলুমবাজির ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গির আসল চেহারা ফাঁস করে দিয়েছে এই ঘটনা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেকে একজন নিষ্ঠাবান খ্রিস্টান হিসেবে দাবি করেন। এই ধর্মের মহাপুরুষ যিশুখ্রিস্টকে ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যা করেছিল ইহুদি কায়েমি স্বার্থবাদীরা। যে কারণে কোনো নিষ্ঠাবান খ্রিস্টানের পক্ষে ইহুদিদের চেয়েও বেশি ইহুদিবাদী হওয়া বেমানান হলেও ট্রাম্প যে সেই বিচ্যুতির শিকার তা সহজেই অনুমেয়। দুই মার্কিন মুসলিম কংগ্রেস সদস্যের ইসরায়েল সফরের বিষয়ে তেলআবিব নিজে থেকে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে তা মেনে নেওয়া যেত। কিন্তু ট্রাম্প নিজ দেশের দুই আইনপ্রণেতার সফর বন্ধে আগ বাড়িয়ে ইসরায়েলকে উসকে দিয়ে প্রকারান্তরে প্রমাণ করেছেন তিনি মার্কিন জনগণ নয়, ইসরায়েলের ইহুদিবাদী শাসকদের কাছে দায়বদ্ধ। বিশ্বের একক পরাশক্তি হিসেবে ভাবা হয় যে দেশকে সে দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের এ আচরণ নিজেদের মর্যাদার জন্যও বেমানান। দুই মার্কিন আইনপ্রণেতা ধর্মবিশ্বাসে মুসলিম হলেও তারা ইসরায়েল সফর করতে চেয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস সদস্য হিসেবে। জর্জ ওয়াশিংটন, আব্রাহাম লিংকন, মার্টিন লুথার কিংয়ের দেশ হিসেবে মানবাধিকারের প্রতি মার্কিনিদের অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেই সফর বানচাল করার জন্য যে সস্তা পথ বেছে নিয়েছেন তা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। এই অপ্রত্যাশিত ও অমার্জিত আচরণ যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে; বিশ্বের দেড় শ কোটি মুসলমানের সঙ্গে ওয়াশিংটনের আস্থার সংকট সৃষ্টিতে ইন্ধন জোগাবে। সব ধর্মের সব মতের দেশ হিসেবে সারা বিশ্বের মানবগোষ্ঠীর কাছে যুক্তরাষ্ট্রের যে আকাশছোঁয়া মর্যাদা রয়েছে তাতে ধস নামাবে। নিজেদের মর্যাদার স্বার্থেই যুক্তরাষ্ট্রের উচিত হবে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের আচরণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর