শনিবার, ১৭ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

সড়ক হোক নিরাপদ

জনসচেতনতা গড়ে তোলার উদ্যোগ নিন

কর্তৃপক্ষের নজরদারি সত্ত্বেও সামাল দেওয়া যাচ্ছে না পরিবহনচালকদের। ঈদে প্রতিদিনই সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ। বৃহস্পতিবার মাত্র এক দিনে সারা দেশে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ২৫ জন। এ নিয়ে ঈদুল আজহার আগে ও পরে পাঁচ দিনে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬০-এ। গত বছর অবশ্য এ সংখ্যা ছিল ৬৫। সংখ্যাতত্ত্বের হিসাবে এ বছর ঈদুল আজহায় প্রাণহানির সংখ্যা কম হলেও তাতে স্বস্তি পাওয়ার অবকাশ নেই। যাত্রীকল্যাণ সমিতির হিসাবে বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় ৮ হাজার। আহতের সংখ্যা নিহতের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি; যার একাংশকে সারা জীবন পঙ্গুত্বের অভিশাপে ভুগতে হয়। সড়ক দুর্ঘটনায় জাতিকে প্রতি বছর গড়ে যে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় তার পরিমাণ প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের ৫৩ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনার পেছনে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর প্রবণতা জড়িত। চালকদের বেপরোয়া মনোভাবে ঘটে ৩৭ শতাংশ দুর্ঘটনা। সোজা কথায়, ৯০ শতাংশ দুর্ঘটনার জন্য প্রত্যক্ষভাবে চালকরাই জড়িত। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ২০১৫ সালের অক্টোবরে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের বৈঠকে বাসের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি নেই বললেই চলে। অদক্ষ চালকের দ্বারা যানবাহন চালানোর কারণে যে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে তা একটি প্রতিষ্ঠিত সত্য। বিআরটিএ সারা দেশে শতাধিক চালক প্রশিক্ষণ স্কুলের নিবন্ধন দিলেও তার বেশির ভাগেরই অস্তিত্ব নেই। লাইসেন্সপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের বদলে উৎকোচের কদর বেশি হওয়ায় প্রশিক্ষণের বিষয়টি উপেক্ষিত হচ্ছে। দুর্ঘটনা কমাতে হলে সড়ক চলাচলের ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার বিষয়টিও জরুরি। এজন্য দরকার নাগরিক সচেতনতাও। চালকদের বেপরোয়া মনোভাবে লাগাম পরাতে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে পার পাওয়ার যে অপঐতিহ্য রয়েছে তার অবসান ঘটাতে হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর