সোমবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

নিশ্চিত হোক দ্রুত বিচার

সীমাবদ্ধতা কাটানোর উদ্যোগ নিন

কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন হলে তা যেমন বেমানান তেমন ধীরগতির জন্য দ্রুত বিচারের মামলাও তার মাহাত্ম্য হারাচ্ছে। ১২০ কার্যদিবসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির বিধান থাকলেও সিংহভাগ মামলা সে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশের ৯টি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে দ্রুত বিচার আইনে করা ৩ হাজার ৫১টি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে ঢাকার চারটি ট্রাইব্যুনালে ঝুলে আছে ২ হাজার ১৩৯টি মামলা। চট্টগ্রামে ৪৬, রাজশাহীতে ১৮১, খুলনায় ৩১৮, বরিশালে ৩৩৮ এবং সিলেটে নিষ্পত্তির অপেক্ষা রয়েছে ২৯টি মামলা। এর মধ্যে পাঁচ বছরের অধিক সময় ধরে বিচারাধীন ২৮৭টি। আর উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে ৫৬টি মামলা। আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ২০০২ সালে প্রণয়ন করা হয় ‘আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন’। আর এ আইনের অধীনে মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য একই বছর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইনও প্রণয়ন করা হয়। দ্রুত বিচার আইন প্রণয়নের সময় দুই বছরের জন্য আইনটি করা হলেও বিভিন্ন সময়ে এর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সম্প্রতি এ আইনের মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়িয়েছে সরকার। সংশোধিত আইনে মামলা নিষ্পত্তিতে বেঁধে দেওয়া হয়েছে ১২০ দিন। এই সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করা না গেলে কারণ উল্লেখ করে বিচারক আরও ৬০ দিন সময় বৃদ্ধি করতে পারবেন বলেও সংশোধিত আইনে উল্লেখ রয়েছে। বিলম্বিত বিচার যে বিচারহীনতার নামান্তর এ বিষয়টি উপলব্ধি করে গুরুতর অপরাধের দ্রুত বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হলেও প্রয়োজনের তুলনায় ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা কম হওয়া, সাক্ষী না আসা এবং আরও কিছু কারণে দ্রুত বিচারের প্রত্যাশা লঙ্ঘিত হচ্ছে। বিচার প্রার্থীরা দ্রুত বিচারের মামলায় বছরের পর বছর ধরে আদালতে যাওয়া-আসা করতে করতে হতাশ হয়ে পড়ছে। দেশে আইনের শাসন ও বিচার প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করার ব্যাপারে সবচেয়ে আগে প্রয়োজন মামলা নিষ্পত্তিতে দ্রুতগতি। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার অধিকার পূরণে শুধু দ্রুত বিচারের মামলা নয়, অন্য সব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। এ উদ্দেশ্যে বিচারকদের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

 

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর