সোমবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

খুলনার জলাবদ্ধতা

অপদখলকৃত খালগুলো উদ্ধার করুন

টানা ছয় ঘণ্টায় ১১৪ মিলিমিটারের রেকর্ড বৃষ্টিতে ডুবে গেছে খুলনা মহানগরীর বিস্তীর্ণ এলাকা। রাস্তাঘাট তো বটেই হাজার হাজার বসতঘরে পানি ওঠায় জনদুর্ভোগের নতুন রেকর্ডও স্থাপিত হয়েছে। রাত ৩টা থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি চলে শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত। এরপর থেমে থেমে দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টি হতে থাকে। খুলনার ভৈরব নদ ও রূপসা নদীতে জোয়ারের কারণে বৃষ্টির পানি দ্রুত নিষ্কাশন না হওয়ায় বিভিন্ন সড়কে পানি জমে জলাবদ্ধতার নগরীতে পরিণত হয় খুলনা। ভারি বৃষ্টিতে মহানগরীর সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকার প্রথম ফেজ, গোবরচাকা, নবীনগর, মুজগুন্নী বাস্তুহারা, শামসুর রহমান রোড, কেডিএ এভিনিউ এলাকার অধিকাংশ ভবনের নিচতলায় পানি প্রবেশ করে। ড্রেনের পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় মহানগরীর পূর্ব বানিয়াখামার, শান্তিধাম মোড়, রয়্যালের মোড়, পিটিআই, নিরালা, বাগমারা, মিস্ত্রিপাড়া, খানজাহান আলী রোড, রূপসা স্ট্যান্ড রোড, খালিশপুর, দৌলতপুরসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। শনিবার সকাল থেকেই পানিতে নিমজ্জিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ঘরের মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নিতে তৎপর হয়ে ওঠে নগরবাসী। রান্নার অভাবে পরিবারের সদস্যরা শুকনা খাবার খেয়ে দিন পার করছেন। খুলনা মহানগরীর পানি নিষ্কাশনের খালগুলো ভরাট ও দখলদারিত্বের কবলে পড়ায় ভারি বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা অনিবার্য হয়ে ওঠে। শনিবারের রেকর্ড বৃষ্টিতে যে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে তা খুলনা মহানগরীর গত একশ বছরের ইতিহাসে কখনো দেখা যায়নি। প্রশাসন ইতিপূর্বে জরিপ চালিয়ে নদী ও খালের ৪৬০ জন দখলদার ও ৩৮২টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করলেও তাদের উচ্ছেদ কিংবা খালগুলো পুনঃখননের উদ্যোগ নেয়নি। শনিবারের একটানা বৃষ্টিপাত মহানগরীর বিস্তীর্ণ এলাকা ডুবে যাওয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে অচিরেই খালগুলো উদ্ধারে অভিযান চালানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের যেসব এলাকা জলাবদ্ধতার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে খুলনা মহানগরীসহ পুরো জেলা তার মধ্যে অন্যতম। আমরা আশা করব মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে অপদখল হয়ে যাওয়া খালগুলো

উদ্ধারে প্রশাসন নিজেদের সক্ষমতার পরিচয় দেবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর