মঙ্গলবার, ২০ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

মিয়ানমারকে আন্তরিক হতে হবে

চীন, ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর চাপে রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে মিয়ানমার কিছুটা হলেও নমনীয়তার পরিচয় দিয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া তালিকা থেকে আপাতত ৩ হাজার ৪৫০ জনকে তারা স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সুযোগ দিতে রাজি হয়েছে। তবে রোহিঙ্গারা দেশে ফিরে যাবে কিনা সে সিদ্ধান্ত তাদেরই নিতে হবে, বাংলাদেশ এ ব্যাপারে চাপ প্রয়োগ করবে না। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) ভূমিকা থাকার কথা থাকলেও তারা নিজেদের সীমাবদ্ধতা জানিয়ে বলেছে, মিয়ানমারের পরিস্থিতি জানার সুযোগ না থাকায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত রোহিঙ্গাদের নিতে হবে। স্মর্তব্য, মিয়ানমার সরকার বাংলাদেশ সরকারকে ৩ হাজার ৪৫০ জন রোহিঙ্গার তালিকা দিয়ে বলেছে, তাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আপত্তি নেই। এ সম্মতির ফলে তাদের মিয়ানমারে ফেরার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সরকারি সূত্রে আভাস দেওয়া হয়েছে, ওই তালিকায় থাকা ব্যক্তির মধ্যে যারা স্বেচ্ছায় মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায় তাদের প্রত্যাবাসনের কাজ চলতি মাসেই শুরু করা হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের অবস্থান হলোÑ কাউকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ফেরত পাঠানো হবে না। বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে ৩ হাজার ৪৫০ জন রোহিঙ্গার তালিকা ইউএনএইচসিআরকে দিয়েছে। তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় ফিরতে চায় কিনা সে বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলতে ইউএনএইচসিআরকে অনুরোধ করা হয়েছে। এদিকে ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের পরিবেশ সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা দিতে পারছে না। বিশেষ করে দেশে ফিরলে তাদের যে জায়গায় রাখার কথা সেসব জায়গায় ইউএনএইচসিআরের প্রবেশাধিকার না থাকায় রোহিঙ্গাদের নিজস্ব উপায়ে তথ্য নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ইউএনএইচসিআর উৎসাহী করছে। রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন জটিল হলেও নিজেদের অধিকার সুরক্ষণে দেশে ফিরে যাওয়ার কোনো বিকল্প নেই। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের অভিন্ন যেসব বন্ধু দেশ উৎসাহ জোগাচ্ছে তাদের এ ব্যাপারে দায়িত্ব নিতে হবে। দেশে ফেরত যাওয়া রোহিঙ্গারা যাতে স্বদেশে নিরাপদে অবস্থান করতে পারে এমন নিশ্চয়তা সৃষ্টি করতে হবে। মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্যের জন্যও এটি জরুরি। রোহিঙ্গা সমস্যা বিষফোঁড়া হয়ে দেখা দিলে তা সংশ্লিষ্ট কোনো পক্ষের জন্য কল্যাণ ডেকে আনবে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর