বুধবার, ২১ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

জননিরাপত্তারক্ষায় ডিএমপি

মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, বিপিএম (বার), পিপিএম

জননিরাপত্তারক্ষায় ডিএমপি

সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা : ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসন ও ট্রাফিক-শৃঙ্খলা নিশ্চিতের লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে প্রণীত নীতি, কৌশল ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে। উল্টো পথে চলাচলকারী যানবাহন, মোটরসাইকেলে দুজনের বেশি আরোহণ, হেলমেটবিহীন ও ফুটপাথে মোটরসাইকেল চালানোসহ ট্রাফিক আইন ভঙ্গকারী সব যানবাহনের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। বিভিন্ন স্কুল-কলেজ, বাস/লঞ্চ টার্মিনাল, মার্কেট, ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ডকুমেন্টারি প্রদর্শন ও সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান প্রচারের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রী, পথচারী ও জনসাধারণকে ট্রাফিক আইন মেনে চলার প্রতি সচেতন করা হচ্ছে।

নারী সার্জেন্টরা রাস্তায় পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। নির্ধারিত স্থানে বাস থামার জন্য ১২১টি স্থানে ‘বাস স্টপেজ শুরু’ ও বাস ‘স্টপেজ শেষ’ সাইনবোর্ড স্থাপন ও সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে ৬০টি স্থানে অনস্ট্রিট পার্কিংব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। প্রতিটি পেট্রল পাম্পে ‘No Helmet-No Fuel’ ব্যবস্থায় মোটরসাইকেল আরোহীরা হেলমেট ব্যবহারে বাধ্য হচ্ছেন। ট্রাফিক গাইডবুক প্রকাশনা করে বিতরণ করা হয়েছে। Radio Masala Spice FM 96.4 চ্যানেলের মাধ্যমে ৩০ মিনিট বিরতিতে ট্রাফিক আপডেট সম্প্রচার করা হচ্ছে। ২০১৮ সালে ট্রাফিক সপ্তাহ, ট্রাফিক সচেতনতামূলক কর্মসূচি ও ট্রাফিক-শৃঙ্খলা সপ্তাহ পালন করা হয়। রোভার স্কাউট, রেড ক্রিসেন্ট, গার্ল গাইডস, বিএনসিসি সদস্যরা সড়ক নিরাপত্তাবিধানে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। ঢাকা মহানগরীতে যানজট সমস্যা সমাধানকল্পে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এবং বাস র‌্যাপিড ট্রানজিটের কাজ। CASE  প্রকল্প কর্তৃক গৃহীত ট্রাফিক সিগন্যাল লাইট মেনে যানবাহন চলাচলের প্রক্রিয়াও দ্রুতগতিতে চলমান রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, এ প্রকল্পগুলো শেষ হলে ঢাকা শহরের যানজট সমস্যা আর থাকবে না।

অবকাঠামোগত উন্নয়ন : পুলিশি কার্যক্রমের দৃশ্যমান বাস্তবায়ন ও ফলপ্রসূ সেবা প্রদানের লক্ষ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন একটি অপরিহার্য বিষয়। সুদূরপ্রসারী চিন্তা-চেতনার ফসল হিসেবে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে নান্দনিক গেট, পূর্বাচল পুলিশ লাইনস  এবং তুরাগ পুলিশ লাইনসের কার্যক্রম, ডেমরা, হাজারীবাগ, ধানমন্ডি ও শেরেবাংলানগর থানা ভবন উদ্বোধন হয়েছে। উত্তরখান, দক্ষিণখান, সবুজবাগ, গুলশান, গেন্ডারিয়া, তুরাগ, লালবাগ, ডেমরা থানা ভবন, ডিএমপি হেডকোয়ার্টার্সে ১২ তলা অফিস ভবন, পিওএম পুলিশ লাইনসে ২০ তলা ব্যারাক ভবন, ২০ তলা আবাসিক টাওয়ার নির্মাণ চলমান রয়েছে। পশ্চিমাঞ্চল পুলিশ লাইনস, শাহজাহানপুর, খিলগাঁও, মুগদা, তুরাগ, সবুজবাগ, চকবাজার, কাফরুল, ভাসানটেক, বাড্ডা, কদমতলী, রামপুরা, চকবাজার, ওয়ারী, হাতিরঝিল থানার জমি অধিগ্রহণ/বরাদ্দ পাওয়া গেছে।

নতুন জনবল সংযোজন : পুলিশের সাংগঠনিক জনশক্তি ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমার দায়িত্ব পালনকালে নতুন জনবল সংযোজনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের জন্য বিভিন্ন পদ মঞ্জুরির মাধ্যমে নতুন ইউনিটসমূহের কার্যক্রম শুরু করেছি। গোয়েন্দা ইউনিটে নতুন বিভাগ সৃষ্টি করা হয়েছে। অপরাধ ও ট্রাফিক বিভাগে নতুন জোন সৃষ্টিপূর্বক বেশিসংখ্যক অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার ও সহকারী পুলিশ কমিশনার নিয়োজিতকরণের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে তদারকি আরও নিবিড় এবং দৃশ্যমান করা হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ পরিবহন পুলের যানবাহনগুলো যথাযথ কার্যকর এবং গতিশীল করার লক্ষ্যে পরিবহন ও ওয়ার্কশপ নামে দুটি বিভাগ গঠন করা হয়েছে।

লেখক : পুলিশ কমিশনার, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর