বুধবার, ২১ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

আল্লাহ বিনয়ীদের মর্যাদা বাড়িয়ে দেন

মাওলানা আবদুর রশিদ

সদাচরণ মানবজীবনের একটি মহৎ গুণ। ইসলামে এ গুণে গুণান্বিত হওয়ার জন্য অনুসারীদের উৎসাহিত করা হয়েছে। আল কোরআনে মুসলমানের আচার-ব্যবহার কেমন হওয়া উচিত তার বিবরণ এসেছে, ‘আর তোমরা সবাই আল্লাহর বন্দনা কর। তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক কোরো না। মাতা-পিতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার কর। আত্মীয়, ইয়াতিম ও মিসকিনদের সঙ্গে সদাচরণ কর। আত্মীয়, প্রতিবেশী, নিকটবর্তীজন, পার্শ্ববর্তী লোকজন, সহচর, মুসাফির (ভ্রমণকারী) এবং তোমার অধীন দাস-দাসীসহ সবার প্রতি ইহসান ও ভালো ব্যবহার কর। নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে, আল্লাহ এমন ব্যক্তিকে পছন্দ করেন না, যে অহংকারী ও গর্বকারী।’ সূরা আন নিসা, আয়াত ৩৬। আমরা যত লোকের সঙ্গে ওঠা-বসা করি, কথা বলি, লেনদেন করি সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। যদি কোনো অভাবী মানুষ কিছু চায় আর আমরা তাকে তা দিতে না পারি তবু তার সঙ্গে ভালো আচরণ করতে হবে। এ বিষয়ে ইরশাদ হচ্ছে, ‘যদি তাদের থেকে (অর্থাৎ অভাবী, আত্মীয়স্বজন, মিসকিন ও মুসাফির থেকে) তোমাকে মুখ ফিরিয়ে নিতে হয় এজন্য যে, এখন তুমি আল্লাহর প্রত্যাশিত রহমতের সন্ধান করে ফিরছ (অর্থাৎ তোমার সামর্থ্য নেই), তাহলে তাদের সঙ্গে মধুর ও নরম ব্যবহার কর।’ সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ২৮। নির্বোধরা যদি ঝগড়া করতে চায়, খারাপ আচরণ করতে চায় তাহলে তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা যাবে না। ভালো আচরণ করতে হবে। তাহলে আল্লাহ খুশি হবেন। ইরশাদ হচ্ছে, ‘রহমানের (আসল) বান্দা তারাই যারা পৃথিবীর বুকে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং মূর্খরা তাদের সঙ্গে কথা বলতে থাকলে বলে দেয়, তোমাদের সালাম। তারা নিজেদের রবের সামনে সিজদায় অবনত  হয়ে ও দাঁড়িয়ে রাত কাটিয়ে দেয়।’ সূরা আল ফুরকান, আয়াত ৬৩-৬৪। হাদিসেও নম্র আচরণের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘আল্লাহ স্বয়ং নম্র, তাই তিনি নম্রতাকেই ভালোবাসেন। তিনি কঠোরতার জন্য যা দান করেন না তা নম্রতার জন্য দান করেন। নম্রতা ছাড়া অন্য কিছুতেই তা দান করেন না।’ মুসলিম। যার মধ্যে নম্রতা নেই সে কল্যাণ থেকে বঞ্চিত। হজরত জারির (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নম্রতা থেকে বঞ্চিত সে প্রকৃত কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত।’ মুসলিম। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন, ‘নম্রতা যে কোনো বিষয়কে সৌন্দর্যমন্ডিত করে। আর কারও কাছ থেকে নম্রতা বিদূরিত করা হলে এটা তাকে কলুষিত করে ছাড়ে।’ মুসলিম। নম্রতা অবলম্বনকারীর মর্যাদা আল্লাহ দিন দিন বাড়িয়ে দেন। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহরই সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে বিনয় ও নম্রতার নীতি অবলম্বন করে, আল্লাহ তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন।’ মুসলিম।

লেখক : ইসলামী গবেষক

সর্বশেষ খবর