শনিবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

হজ-পরবর্তী জীবন কেমন হওয়া উচিত

মুফতি মাওলানা মহিউদ্দিন কাসেম - পেশ ইমাম : বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ

হজের সফরের পূর্ণ সময়টা মূলত মানুষের জীবনে তাকওয়া ও আল্লাহ -ভীতি অর্জনের এক মোক্ষম সময়। এ স্বল্প সময়ের প্রশিক্ষণে একজন মানুষ নিজেকে মুত্তাকি হিসেবে গড়ে তোলে। তাই দেশে ফিরেও যেন সেই তাকওয়া অটুট থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখা আবশ্যক। আর হজের সফরের আগে থেকে পেশাগত অথবা অন্য কোনো প্রকার গুনাহের কাজে জড়িত থাকলে হজ সফরের আগেই তা থেকে সম্পূর্ণভাবে পৃথক হয়ে যাওয়া এবং হজের সময়জুড়ে আল্লাহর কাছে বার বার কায়মনোবাক্যে ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকা জরুরি। আর হজ শেষে দেশে ফিরে সব রকমের গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা আবশ্যক। এজন্য আল্লাহওয়ালাদের সংস্পর্শে থাকা উচিত। এ সম্পর্কে কোরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ইমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সাদিকিন অর্থাৎ আল্লাহওয়ালাদের সঙ্গে থাক।’ সূরা তওবা, আয়াত ১১৯। এ আয়াতে প্রথমত মুমিনদের সম্বোধন করে বলা হয়েছে যে, হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। আর এ ভয় করার উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহর অবাধ্যতা না করা ও গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা। তবে যেহেতু আমাদের পরিবেশে গুনাহ থেকে বাঁচা খুবই কঠিন, কেননা আমাদের চারদিকে শুধু গুনাহ আর গুনাহ। তাই এ পরিবেশে তাকওয়া অবলম্বনের সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হলো আল্লাহওয়ালাদের সোহবত ও সাহচর্যে থাকা। কারণ আল্লাহতায়ালা তাকওয়া অবলম্বনের আদেশ দেওয়ার পাশাপাশি আল্লাহওয়ালাদের সাহচর্যে থাকারও নির্দেশ করেছেন। আর কোরআনের একটি নীতি এই যে, যখনই আল্লাহতায়ালা এমন কোনো হুকুম প্রদান করেন, যা পালন করা কষ্টসাধ্য তখন পাশাপাশি অন্য এমন একটি আদেশ প্রদান করেন যার ওপর আমল করলে প্রথম হুকুমের ওপর আমল করা সহজ হয়ে যায়। আর তাই আল্লাহওয়ালাদের সঙ্গে থাকা, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়া, তাদের কথা মান্য করা ইত্যাদির মাধ্যমে গুনাহ থেকে সহজেই বেঁচে থাকা সম্ভব। কেননা, মানুষ স্বভাবগতভাবেই পরিবেশের প্রভাবে প্রভাবিত হয়। ফলে গুনাহের পরিবেশ বর্জন করে নেক ও সৎ  লোকদের পরিবেশে নিজেকে অভ্যস্ত করে বাকি জীবন গুনাহমুক্তভাবে কাটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা অপরিহার্য। এ ছাড়া নিম্নোক্ত আমলগুলো নিয়মিতভাবে করে যাওয়া উচিত। ১. প্রতিদিন নিয়মিতভাবে কিছু পরিমাণ  কোরআন মাজিদ তিলওয়াত করা ২. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে গিয়ে তাকবিরে উলার সঙ্গে আদায়ের চেষ্টা করা ৩. প্রতিদিনের ফরজ ও সুন্নাত নামাজের পাশাপাশি কিছু পরিমাণ নফল নামাজেরও অভ্যাস গড়ে তোলা ৪. প্রতি রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার চেষ্টা করা ৫. প্রতিদিন ইসতিগফার, দরুদ ও অন্যান্য দোয়া-জিকির ইত্যাদি পাঠ করা ৬. প্রতিটি কাজ রসুলের সুন্নাত অনুযায়ী করা ৭. এক মুহূর্তের জন্যও আল্লাহকে অসন্তুষ্ট না করা ৮. একজন কামিল বুজুর্গের তত্ত্বাবধানে নিজেকে পরিচালনা করা।

সর্বশেষ খবর