শনিবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ্য দুর্বোধ্য

দুধকলা দিয়ে সাপ পোষা ঠিক নয়

রোহিঙ্গাদের সাফ কথা- ‘আরা ন যাইয়ুম’। গত বৃহস্পতিবার ৩০০ জনের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সব প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও মিয়ানমারের একরোখা এই ক্ষুদ্র জাতিসত্তার একজন সদস্যও ফিরে যায়নি। স্বদেশে ফিরে যাওয়ার বদলে বাংলাদেশে বিনা পরিশ্রমে খাওয়া-দাওয়া-থাকা ও মশার মতো প্রজনন ঘটিয়ে নিজেদের সংখ্যাবৃদ্ধিকে তারা নিজেদের জন্য সুবিধাজনক বলে ভেবেছে। এটা নিয়ে রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দুটি উদ্যোগ ব্যর্থ হলো। সহজেই অনুমেয়, ওদের উদ্দেশ্য দুর্বোধ্য। বিরক্ত হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, রোহিঙ্গাদের আরাম কমানো হবে। রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আপত্তি রয়েছে কিছু পশ্চিমা দেশের। পেছন থেকে কলকাঠিও নাড়ছে তারা। উদ্দেশ্য, বিশ্বরাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বী একটি দেশকে বিব্রত অবস্থায় ফেলা। উগ্রপন্থি কিছু রোহিঙ্গা সংগঠনের অপপ্রচারও এ অবস্থার জন্য দায়ী। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালেই ৩০০ জনকে ফেরত পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। এজন্য সকাল থেকে প্রস্তুত রাখা হয় টেকনাফের কেরানতলী ও নাইক্ষ্যংছড়ি ট্রানজিট পয়েন্ট। ৫টি বাস ও ৫টি ট্রাক সকাল ৯টা থেকে রাখা হয় টেকনাফের শালবন ক্যাম্পে। উদ্দেশ্য, মিয়ানমারগামী রোহিঙ্গাদের মালপত্র বহনে এসব পরিবহন ব্যবহার করা হবে। নাফ নদের কিনারে কেরানতলী প্রত্যাবাসন ঘাটে রোহিঙ্গাদের সাময়িক অবস্থানের জন্য ৩৩টি ঘর ও অন্যান্য সুবিধাও প্রস্তুত রাখা হয় সকাল থেকে। জলপথে প্রত্যাবাসন হলে এ ঘাট দিয়েই রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো হবে। অন্যদিকে স্থলপথে প্রত্যাবাসন হলে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ঘাট দিয়ে রোহিঙ্গাদের স্বদেশ পাঠানো হবে। সূর্যোদয়ের পর পরই প্রত্যাবাসন পয়েন্টে পৌঁছে যান আরআরআরসি ও ইউএনএইচসিআরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার ও ঢাকায় চীনা দূতাবাসের দুই কূটনীতিক এবং মিয়ানমারের বাংলাদেশ দূতাবাসের একজন কাউন্সিলর। কিন্তু দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য কাউকে পাওয়া না যাওয়ায় স্থগিত হয় মহাযজ্ঞ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইতিমধ্যে বলেছেন, প্রত্যাবাসনবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রোহিঙ্গাদের দাবির কাছে জিম্মি হওয়া যাবে না এমন কথাও বলেছেন তিনি। আমাদের মতে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থেই রোহিঙ্গাদের বিষয়ে সরকারকে আরও স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নিতে হবে। প্রয়োজনে বাংলাদেশ থেকে যেভাবেই হোক বের করে দেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে। দেশের অভ্যন্তরের একটি প্রেসার গ্রুপের চাপে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বানে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। দুধকলা দিয়ে সাপ পোষা কোনোভাবেই উচিত হবে না।

সর্বশেষ খবর