সোমবার, ২৬ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

মীর জুমলা

মীর জুমলা (১৫৯১-১৬৬৩) ছিলেন বাংলার নামকরা সুবাদার। তিনি মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের প্রতিনিধি ছিলেন। তনি নিজে ব্যবসায়ী হওয়ায় দেশের অর্থনীতিতে ব্যবসা-বাণিজ্যের অবদান সম্পর্কে সচেতন ছিলেন। তার আমলে পর্তুগিজদের ব্যবসার অবনতি ঘটে। তবে ওলন্দাজ ও ইংরেজ কোম্পানিগুলোর উত্থান ঘটে। তিনি ইউরোপীয়সহ বিদেশি বণিকদের রাজকীয় ফরমানে প্রদত্ত সুবিধা গ্রহণে সহায়তা করেন। তিনি সপ্তদশ শতাব্দীর একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব যিনি কেরানি হিসেবে জীবন শুরু করেছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি একজন শ্রেষ্ঠতম সেনানায়ক এবং মুঘল সাম্রাজ্যের একজন যোগ্যতম গভর্নর হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন। ঢাকা ও শহরতলি এলাকায় মীর জুমলার নির্মাণ কর্মকান্ডের মধ্যে রয়েছে দ্রুত সৈন্য চলাচল, যন্ত্রপাতি ও গোলাবারুদ প্রেরণ এবং জনকল্যাণে নির্মিত দুটি রাস্তা ও দুটি সেতু। কৌশলগত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রয়োজনে তিনি কয়েকটি দুর্গ নির্মাণ করেন। একটি দুর্গ ছিল টঙ্গী জামালপুরে, যা ঢাকাকে উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে সংযুক্ত করে (বর্তমানে ময়মনসিংহ রোড) সড়কটির নিরাপত্তা বিধান করত। অন্য সড়কটি পূর্বদিকে চলে গিয়ে রাজধানীকে ফতুল্লার (পুরাতন ধাপা) সঙ্গে যুক্ত করেছে, যেখানে দুটি দুর্গ রয়েছে। আরও বিস্তৃত হওয়া এ সড়কটি দিয়ে খিজিরপুর পর্যন্ত যাওয়া যেত এবং সেখানেও দুটি দুর্গ অবস্থিত। ফতুল্লার অদূরে পাগলা সেতুটি এ রাস্তায় অবস্থিত। মীর জুমলা নির্মিত সড়ক ও দুর্গগুলোর কিছু অংশ এখনো বিদ্যমান রয়েছে। বাংলায় মীর জুমলার শাসনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে তার উত্তর-পূর্ব সীমান্ত নীতি, যার দ্বারা তিনি সীমান্তবর্তী কামরূপ এবং আসাম রাজ্যগুলো জয় করেছিলেন। নিজের চেষ্টায় সামান্য অবস্থা থেকে অতি উচ্চ পদে উন্নীত মীর জুমলা ছিলেন সতের শতকে ভারতের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম। একজন সাধারণ কেরানি হিসেবে জীবন শুরু করে তিনি মুঘল সাম্রাজ্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সেনাপতি ও সুবাদার হয়েছিলেন। ড. মুনতাসীর মামুন ‘ঢাকার হারিয়ে যাওয়া কামানের খোঁজে’ গ্রন্থতে বুড়িগঙ্গার তীরে মীর জুমলার  স্থাপন করা দুটি কামানের কথা উল্লেখ  করেছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর