বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

মোনাফেকির কবিরা গুনাহ থেকে দূরে থাকতে হবে

মাওলানা আবদুর রশিদ

মোনাফেকি একটি বদভ্যাস। দুনিয়ার সব সমাজেই এ ধরনের মানুষ নিন্দিত। ইসলাম সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের ধারণা এগিয়ে নিতে চায়। যে কারণে ইসলামে মোনাফেকিকে চরম নিন্দার চোখে দেখা হয়। ধর্মীয় দৃষ্টিতে এটি কবিরা গুনাহ বা গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। আমাদের সবারই উচিত এ বদভ্যাস থেকে দূরে থাকা। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যার মধ্যে চারটি বদভ্যাস পাওয়া যাবে সে পরিপূর্ণ মোনাফেক। আর এর মধ্য থেকে কোনো একটি বদভ্যাসও যদি কারও ভিতর থাকে, তবে তা বন্ধ না করা পর্যন্ত তার ভিতর মোনাফেকির একটি বৈশিষ্ট্য থাকবে। চার বদভ্যাস হচ্ছে- সে যখন কথা বলে অসত্য বলে, তার কাছে কিছু গচ্ছিত রাখা হলে তা খিয়ানত বা আত্মসাৎ করে, কোনো ওয়াদা করলে তা রক্ষা করে না, কারও সঙ্গে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়লে সীমা লঙ্ঘন তথা অশ্লীল গালিগালাজ করে।’ বুখারি, মুসলিম। মোনাফেকদের কিয়ামতের দিন তাদের দুরাচারের জন্য জবাবদিহির সম্মুখীন হতে হবে। হজরত ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন প্রত্যেক বিশ্বাসঘাতকের জন্য একটি করে পতাকা থাকবে। তা দেখিয়ে বলা হবে, এ হচ্ছে অমুকের ছেলে অমুকের বিশ্বাসঘাতকতা।’ মুসলিম। আল্লাহ মোনাফেকি সম্পর্কে কতটা কঠোর মনোভাব গ্রহণ করবেন সে সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন, ‘তিনজনের বিরুদ্ধে কিয়ামতের দিন আমি অভিযোগ দায়ের করব- যে আমার সঙ্গে অঙ্গীকার করেও পরে বরখেলাপ করে, যে লোক কোনো স্বাধীন মানুষকে (দাস হিসেবে) বেচে দিয়ে তার মূল্য ভোগ করে, যে লোক কাউকে কাজে লাগিয়ে তার কাছ থেকে সম্পূর্ণ কাজ আদায় করে নেয়, অথচ তার প্রাপ্য পারিশ্রমিক দেয় না।’ বুখারি। ইবনে মাজাও আবু হোরায়রা (রা.) থেকে অনুরূপ হাদিস বর্ণনা করেছেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে লোক আপন হাতকে আনুগত্যহীন অবস্থায় রেখেছে, কিয়ামতের দিন আল্লাহর সাক্ষাতে তার জন্য কোনোই পুরস্কার থাকবে না। আর যে কোনো বায়াতহীন (অঙ্গীকারবিহীন) অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে, সে জাহেলিয়ার মৃত্যুবরণ করে।’ মুসলিম। আমরা যদি অঙ্গীকারবদ্ধ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করতে চাই এবং দুনিয়ায় আল্লাহর নির্দেশিত পথে জীবনযাপন করতে চাই তাহলে মোনাফেকির পথ থেকে দূরে থাকতে হবে।

 

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর