বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

ওয়াসার হরিলুট

যথাযথ তদন্ত করা হোক

রাজধানীর মিরপুরে পানি সরবরাহের উদ্দেশ্যে ওয়াসার নেওয়া ৫৭৩ কোটি টাকার প্রকল্পের হরিলুটের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে বাংলাদেশ প্রতিদিনের শীর্ষ প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়েছে, প্রকল্প বাস্তবায়নে গভীর নলকূপসহ পাম্প বসানোর জায়গায় শুধু পাইপ বসিয়ে কাজ শেষ করেছেন ঠিকাদার। ৪৬টি গভীর নলকূপ বসানোর কথা থাকলেও ৫টিতে পানি ওঠানোর প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিই বসানো হয়নি। ৩টিতে শুধু নলকূপের পাইপ বসিয়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করে ঠিকাদার বিল তুলে নিয়েছেন। ৫৭৩ কোটি টাকার প্রকল্পে ধাপে ধাপে হরিলুট চললেও এখনো অধিগ্রহণ করা জমির ক্ষতিগ্রস্তদের অর্থ পরিশোধ করা হয়নি। কোরিয়ান কোম্পানি হুন্দাই রোটেম ওয়াসার এ প্রকল্পের মূল ঠিকাদার। তাদের নিয়োগকৃত স্থানীয় ঠিকাদার হিসেবে কাজ করেছে অ্যারিডড গ্রুপ। এ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, সাভারের ভাকুর্তা ও কেরানীগঞ্জে প্রকল্পের কাজ শেষে তা ওয়াসাকে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রকল্প যেহেতু শেষ বিল ঠিকাদারকে পরিশোধের কথা। তবে এ-সংক্রান্ত লেনদেন ওয়াসার সঙ্গে হুন্দাই কোম্পানির হয়েছে। প্রকল্প হস্তান্তর হলেও ৫টি পাম্প বন্ধ ও ৩টিতে শুধু পাইপ বসিয়ে রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, ওই প্রকল্পের অধিগ্রহণকৃত জমির মূল্য এখনো স্থানীয়দের পরিশোধ করা হয়নি। এজন্য তারা কাজ শেষ করতে পারেননি। তাদের বুঝিয়ে শুধু পাইপটুকু বসাতে পেরেছেন। অন্য কয়েকটি গভীর নলকূপের ছোটখাটো কিছু কাজ বাকি আছে। মিরপুরে পানি সরবরাহে ওয়াসার প্রকল্পের যথার্থতা নিয়ে শুরুতেই প্রশ্ন ওঠে। সংশ্লিষ্ট এলাকার পানির স্তর নিচে নেমে গেছে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের জন্য। ফলে গভীর নলকূপ এলাকার চাষিরা চাষের জন্য সেচ দিতে পারছেন না। ভাকুর্তায় কোনো বাড়ির টিউবওয়েল দিয়ে আর পানি উঠছে না। সংশ্লিষ্ট এলাকায় ইরি ধান চাষ বন্ধ হয়ে গেছে পানি সংকটের কারণে। ক্ষুব্ধ কৃষক গত মে মাসে ওয়াসার পাম্প ভাঙচুর করে তাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। ঢাকার পানির চাহিদা পূরণে ভূগর্ভস্থ পানির বদলে নদ-নদীর ওপর নির্ভরশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। মিরপুরে পানি সরবরাহের নামে সাভারের ভাকুর্তা, তেঁতুলঝোড়া ও কেরানীগঞ্জের তারানগরে গভীর নলকূপ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও সেখানকার ভূগর্ভস্থ পানির মজুদ সম্পর্কে পরিপূর্ণ জরিপ করা হয়নি। মিরপুরবাসীর পানির চাহিদা পূরণ, না নিজেদের পকেট ভরার তাগিদ- কোনটি প্রকল্প প্রণয়নের সময় বেশি সক্রিয় ছিল তা নিয়েও প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে যথাযথ তদন্ত ও সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহি কাম্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর