বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

মালামাল খালাসে মনোপলি

চট্টগ্রাম বন্দরে সংকট সৃষ্টি করছে

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে জাহাজ থেকে মালামাল খালাসে বাংলাদেশ শিপ হ্যান্ডলিং অ্যান্ড বার্থ-অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে যথেচ্ছতার অভিযোগ তুলেছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। তাদের অভিযোগ, বহির্নোঙরে জাহাজ থেকে মালামাল খালাসে শিপ হ্যান্ডলিংয়ের ক্ষেত্রে অ্যাসোসিয়েশনের প্রভাব বিস্তারের ফলে দেশের বড় শিল্প গ্রুপগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরের গতিশীলতার ক্ষেত্রে অ্যাসোসিয়েশন প্রতিবন্ধকতার মতোই কাজ করছে। ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, ওয়ান-ইলেভেনের পর ২০০৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কার্গোর চাপ অন্তত দ্বিগুণ বেড়েছে। কিন্তু এই সময়ে শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটরের সংখ্যা বাড়েনি। শুধু বেড়েছে অ্যাসোসিয়েশনের নিয়ন্ত্রণ। অথচ একই সময়ের মধ্যে শুধু চট্টগ্রাম বন্দর নয়, দেশের সব কটি খাতের সব কটি বিভাগেই লোকবল বৃদ্ধিসহ সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। কেবল শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটরের ক্ষেত্রেই অবলম্বন করা হচ্ছে ‘সংকোচন নীতি’। বিশেষ করে বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠীগুলো যাতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করতে না পারে সেজন্য নানা কৌশলে করা হচ্ছে হয়রানি, যার ফল ভোগ করতে হয় সাধারণ ক্রেতাদের। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে এ ধরনের কার্যক্রমকে ‘সন্ত্রাসের শামিল’ বলে অভিহিত করেছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা। চট্টগ্রাম বন্দরের মাল খালাসে অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে অযৌক্তিক প্রভাব বিস্তারের যে অভিযোগ উঠেছে তা দুর্ভাগ্যজনক এবং স্বীকার করতেই হবে, মুক্তবাজার অর্থনীতির এই যুগে এ ধরনের ভূমিকা গ্রহণযোগ্য নয়। বন্দর থেকে মালামাল খালাস দ্রুত করা সম্ভব হলে জাহাজ ভাড়া কমে যায় এবং আমদানিকৃত পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকে। এর বিপরীতে শুধু মূল্যবৃদ্ধি নয়, দেশে সংশ্লিষ্ট পণ্যের সংকট শুরু হওয়ার আশঙ্কা থাকে। চট্টগ্রাম বন্দরের মালামাল ওঠানো-নামানোর কার্যক্রম গত এক যুগের ব্যবধানে দ্বিগুণের বেশি বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও অপারেটরের সংখ্যা সীমিত রাখা বৈসাদৃশ্যের নামান্তর। বিশেষত বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠীগুলোর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পণ্য খালাসের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তাদের তা থেকে বঞ্চিত রাখা শুধু অগ্রহণযোগ্যই নয়, বন্দরের সুনামের জন্যও বিড়ম্বনার শামিল। আমরা আশা করব, বন্দর কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টির দিকে নজর দেবে এবং অ্যাসোসিয়েশনের মনোপলি মনোভাব নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর