শনিবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৯ ০০:০০ টা

দেশ জাতি ও জাতীয় নেতাদের প্রতি আমাদের করণীয়

মুফতি এহসানুল হক জিলানী
পেশ ইমাম, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ

একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ একটি জাতির জন্য আল্লাহ রব্বুল আলামিনের বিরাট রহমত। আল্লাহ আমাদের বাংলাদেশ নামক একটি স্বাধীন দেশ দান করে আমাদের ওপর অপার করুণা করেছেন। এর শুকরিয়াস্বরূপ আমরা জীবনভর সিজদায় পড়ে থাকলেও শোকর আদায় হবে না। এখন আমাদের করণীয় হলো, এ দেশটাকে ভালোবাসা, এ দেশের উন্নতি, অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধির জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো, এ দেশের উন্নতি-অগ্রগতির পথে বাধা হতে পারে এমন যে কোনো কাজ বিশেষ করে দুর্নীতি থেকে দূরে থাকা এবং দুর্নীতি প্রতিহত করা। সর্বোপরি এ দেশের স্বাধীনতার অতন্দ্রপ্রহরী হিসেবে নিজেকে অটল পাহাড়ের মতো প্রতিষ্ঠিত করা। দুর্নীতি একটি নিন্দনীয় বস্তু। আল্লাহ দুর্নীতি পছন্দ করেন না। আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যখন তারা ফিরে যায়, তারা জমিনে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করার এবং ফসলাদি ও মানবসম্পদ ধ্বংসের চেষ্টা চালায়।’ আল্লাহ ফ্যাসাদ পছন্দ করেন না। ফ্যাসাদ মানে দুর্নীতি। কোনো জাতির মধ্যে যখন এই ব্যাধি ঢুকে পড়ে তখন সে জাতি নিজে নিজেই ধ্বংস হয়ে যায়। এজন্য এ দেশের প্রতি আমাদের ভালোবাসার দাবি হলো, এ দেশের ক্ষতি হয় এমন যে কোনো কাজ থেকে আমরা বিরত থাকব। জাতি হিসেবে আমরা বড়ই সৌভাগ্যবান। আমরা এক ভাষাতেই কথা বলি। আমাদের মায়ের ভাষা বাংলা। আমরা এক ভাষাতেই আমাদের ভাবের আদান-প্রদান করতে পারি। একই ভাষাভাষী হিসেবে আমাদের জাতিগত ভালোবাসা ও সহমর্মিতা অন্যসব জাতির চেয়ে অধিক হবে, এটাই হচ্ছে স্বাভাবিক। তাই আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের বিপদে পাশে দাঁড়াব। সমাজের গরিব, দুঃখী, অনাথ ও এতিমদের প্রতি সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দেব। ব্যক্তিস্বার্থের চেয়ে জাতীয় স্বার্থ প্রাধান্য দেব। ব্যক্তি উন্নয়নের চেয়ে জাতীয় উন্নয়নকে অধিক মাত্রায় গুরুত্ব দেব। একজন মুমিন মুসলমান হিসেবে জাতির প্রত্যেক সদস্য আমাকে যেন তাদের জানমালের ব্যাপারে নিরাপদ ভাবে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করব। কারণ রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘মুমিন হচ্ছে সেই ব্যক্তি, যাকে লোকেরা তাদের জান ও মালের ব্যাপারে নিরাপদ মনে করে।’

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও ইরশাদ করেন, ‘খাঁটি মুসলমান ওই ব্যক্তি, যার হাত ও মুখ থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে।’ আর জাতীয় নেতাদের প্রতি আমাদের করণীয় হলো, দেশের কল্যাণে, জাতির কল্যাণে তারা যখন যে পদক্ষেপ নেন, আমরা সর্বাত্মকভাবে সে পদক্ষেপ বাস্তবায়নে তাদের সহযোগিতা করব। দেশের স্বার্থে, জাতির স্বার্থে আমরা তাদের কল্যাণকামী হব। আরেকটি হাদিয়ে আছে- ‘রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, দীন হচ্ছে কল্যাণকামিতার নাম। আমরা বললাম, ইয়া রসুলুল্লাহ! কার জন্য? তিনি বললেন, আল্লাহর জন্য, তাঁর কিতাবের জন্য, তাঁর রসুলের জন্য এবং মুসলমানদের নেতৃবৃন্দ ও তাদের জনসাধারণের জন্য।’ তো এ হাদিসে জাতীয় নেতাদের প্রতি কল্যাণকামিতার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর এ কল্যাণকামিতা হবে দেশ ও জাতির কল্যাণে তাঁদের গৃহীত পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নে তাদের সহযোগিতার মাধ্যমে।

আল্লাহ রব্বুল আলামিন আমাদের দেশ, জাতির কল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ ও জাতীয় নেতাদের প্রতি কল্যাণকামী হওয়ার তাওফিক দান করুন।

 

 

সর্বশেষ খবর