রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বন্ড সুবিধার অপব্যবহার

অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত হোক

শুল্কমুক্ত বন্ড সুবিধায় পণ্য আমদানির সুযোগ দেওয়া হয় রপ্তানিমুখী শিল্পকে সহায়তা করার জন্য; যার উদ্দেশ্য দেশের রপ্তানি বাড়ানো, সংশ্লিষ্ট শিল্পগুলো যাতে রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে সে সামর্থ্য জোগানো। কিন্তু দেশের বেশকিছু রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান যথেচ্ছভাবে বন্ড সুবিধার অপব্যবহার করে চলেছে। বন্ড সুবিধায় আনা পণ্য কালোবাজারে বিক্রি করে দেওয়ায় দেশের বস্ত্র, কাগজ ও অন্যান্য শিল্পে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে। বন্ড সুবিধায় আনা কাপড় খোলাবাজারে পাচারের ফলে বস্ত্রশিল্প অসম প্রতিযোগিতার সম্মুখীন। দেশের সমৃদ্ধ কাগজশিল্পের অস্তিত্বের জন্য বিপদ সৃষ্টি করেছে অসৎ ব্যবসায়ীদের বন্ড সুবিধায় আমদানি করা কাগজ কালোবাজারে পাচার। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর চোরাকারবারিতে জড়িত ৬৬টি পোশাক কারখানাকে চিহ্নিত করেছে। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি-বিজিএমইএকে এসব কারখানার সদস্যপদ বাতিলের অনুরোধ জানিয়েছে এনবিআর। বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জসহ কয়েকটি এলাকা থেকে বন্ড সুবিধায় আনা পণ্য খোলাবাজারে বিক্রির সময় ধরা হয়। হাতেনাতে ধরা পড়া বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানই তাদের অপরাধ স্বীকার করে জরিমানার অর্থ পরিশোধ করেছে। শতভাগ রপ্তানিকারকদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় কাঁচামাল আমদানির সুযোগ দেয় সরকার। শর্ত হলো, এ সুবিধায় আমদানি করা কাঁচামাল এনবিআর-নির্ধারিত গুদামে রেখে তা দিয়ে তৈরি পণ্য বিদেশে রপ্তানি করতে হবে। এটি বন্ডেড ওয়্যারহাউস সুবিধা নামে পরিচিত। বন্ডেড সুবিধায় আনা পোশাকশিল্পের কাঁচামালের শুল্ক-করের পরিমাণ প্রকারভেদে ৬০ থেকে ১১০ শতাংশ কিংবা এর বেশিও হয়। চোরাকারবারে জড়িত ৬৬ পোশাক কারখানার শুল্ক-কর ফাঁকির তথ্যও এনবিআর বিজিএমইএর কাছে পাঠিয়েছে। আমরা আশা করব, রপ্তানিমুখী পোশাকশিল্পের জন্য বিদ্যমান বন্ড সুবিধা অব্যাহত থাকবে এবং পোশাকশিল্পের সুনামের স্বার্থে বিজিএমইএ চৌর্যবৃত্তিতে জড়িত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর নিবন্ধন বাতিলসহ অন্যান্য ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও ভাবা উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর