সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

আব্রাহাম লিঙ্কন

আফতাব চৌধুরী

বইয়ের বিকল্প নেই। কিন্তু, আজকের দিনে বই পড়ার অভ্যাস প্রায় নেই বললেই চলে। ছাত্রছাত্রী গল্পের বই পড়লেও, তাদের সংখ্যা হাতেগোনা। বই পড়ার কথা উঠলে খুব কম ছেলেমেয়েই আগ্রহ দেখায়। তাই, এখন বইমেলা থেকে বই কেনার হার প্রায় কমেই গেছে। তবে এটা সত্যি, আমাদের প্রকৃত শিক্ষক বই-ই। রাশিয়া, জাপান, ব্রিটেন, আমেরিকার মতো দেশসমূহ ও সেসব দেশের মানুষ যে এত বড় হয়েছেন তার একটাই কারণ- ওইসব দেশের লোক বেশি করে বই পড়ে। আব্রাহাম লিঙ্কনের নাম তো আমরা অনেকেই জানি। তার ছেলেবেলার একটি ঘটনা এখানে উল্লেখ করছি। আব্রাহাম লিঙ্কন ছিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। ছেলেবেলায় আমেরিকার কেনটাকির কাছে গ্রামে তার জন্ম। অজপাড়াগাঁয়ের ছেলে। ওই গ্রামের গভীর জঙ্গলের মধ্যে ছিল তার বাড়ি। লিঙ্কনের বাবার একটি মুদির দোকান ছিল। বাবার সঙ্গে বসে লিঙ্কন দোকানে তেল, নুন বিক্রি করতেন। ১২ বছর পর্যন্ত লিঙ্কন নিরক্ষর ছিলেন। তার যখন বয়স নয় বছর তখন তার মা মারা গেলেন। বাবা আবার বিয়ে করেন। বিমাতা এসে বালক লিঙ্কনকে আদর করতে শুরু করলেন। তিনি তাকে ‘এ-বি-সি-ডি’ শেখালেন। প্রাইমারি স্কুলে ভর্তিও করে দিলেন। তার গরিব বাবার শ্লেট কিনে দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না। লিঙ্কন কোদালের ওপর খড়িমাটি দিয়ে লেখা প্র্যাকটিস করতেন। তার জীবনের স্বপ্ন ছিল নিজেকে গড়তে হবে,  অনেক বড় হতে হবে। এ জন্য অনেক বই পড়তে হবে। তাই তিনি যেখানে বই আছে জানতে পারতেন সেখানেই ছুটে যেতেন। একবার ছাত্রাবস্থায় আব্রাহাম লিঙ্কন খোঁজ পেয়েছিলেন, এক ধনী ভদ্রলোকের বাড়িতে প্রচুর বই আছে। কিন্তু সেই ভদ্রলোকের বাড়ি যেতে গেলে নদী পেরিয়ে যেতে হয়। আব্রাহামের কাছে খেয়া পারাপারের পয়সা ছিল না। তাই তিনি প্রচন্ড শীতের মধ্যেও সেই নদীতে সাঁতার কেটে পার হয়ে ওই ধনী ব্যক্তির বাড়িতে যেতেন শুধু বই পড়ার উদ্দেশে।  এমন করে তিনি অনেক বই পড়েছিলেন। লিঙ্কনের জীবন থেকে আমাদেরও শিক্ষণীয় রয়েছে, যে কোনো ব্যর্থতায় ভেঙে পড়া ঠিক নয়। বারবার চেষ্টা করে যেতে হয়। আর লিঙ্কনও আমাদের বোঝাতে চেয়েছেন, বই না-পড়লে নিজের জীবনকে সঠিকভাবে গঠন করা যায় না। এমনকি, কোনো জাতি উন্নত হতে পারে না। ইউরোপ, জাপান যে এত দূর এগিয়ে আছে তার কারণ হলো এসব দেশের ছেলেমেয়েরা ছোটকাল থেকেই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর