মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ওয়াসা এবং দুর্নীতি

প্রতিটি প্রকল্প সম্পর্কে তদন্ত হোক

ওয়াসা আর দুর্নীতি সমার্থক শব্দ হিসেবে পরিচিত বহু বছর ধরে। মুন্সীগঞ্জের যশলদিয়া থেকে পদ্মার পানি পরিশোধন করে ঢাকা আনার প্রকল্পটিও দুর্নীতির চক্রাবলে পড়ে সরকারি অর্থের অপচয় নিশ্চিত করছে। প্রকল্পের কাজ আট মাস আগে শেষ হলেও এটি চালু করা সম্ভব হয়নি এর সঙ্গে আরব্য উপন্যাসের থিপ অব বাগদাদের চোর-মহাচোরেরা সম্পৃক্ত থাকায়। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি পরীক্ষামূলকভাবে একবার চালু করা হলেও পাঁচ মিনিটের মধ্যেই পানির পাইপ ফেটে ভেস্তে গেছে পুরো প্রকল্প। কম পুরুত্বের নিম্নমানের পাইপ ব্যবহারের পরিণতিতে এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সীমাহীন লুটপাট ও অনিয়মে ডুবতে বসেছে ওয়াসার ৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকার এ প্রকল্প। নিম্নমানের বলে অভিযুক্ত ‘কে৯’ পাইপ সরবরাহ না করতে ঠিকাদারকে চিঠি দেওয়ায় সরিয়ে দেওয়া হয় প্রকল্প পরিচালককে। ২০১৪ সালের ৯ অক্টোবর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেন তৎকালীন প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী এম এ রশীদ সিদ্দিকী। চায়না সিএএমসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিকে দেওয়া ওই চিঠিতে প্রকল্প পরিচালক লেখেন- ঢাকা ওয়াসার সঙ্গে এ প্রকল্পের চুক্তি অনুযায়ী ‘কে৯’ ডাকটাইল পাইপ গ্রহণযোগ্য নয়। এ চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ওয়াসার মহাক্ষমতাধর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সংস্থার তৎকালীন উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সিরাজউদ্দিন ও প্রধান প্রকৌশলী আবুল কাশেমকে অনেকটা ধমক দিয়ে মেইল করেন। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে প্রকল্প পরিচালককে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। শিডিউল অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন ওয়াসার মহাক্ষমতাধর কর্মকর্তাদের স্বার্থের পরিপন্থী হওয়ায় তাকে পুরস্কৃত হওয়ার বদলে শাস্তি পেতে হয়। মানহীনভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হওয়ায় ৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকার এ প্রকল্পের পুরো অর্থ ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। ঢাকা ওয়াসার প্রায় প্রতিটি প্রকল্পের পেছনে জনস্বার্থের বদলে কর্তাব্যক্তিদের পকেট ভরার বিষয়টি প্রাধান্য পায়- এটি একটি ওপেন ক্রিকেট। বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে ওয়াসার প্রতিটি প্রকল্প সম্পর্কে তদন্ত হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর