বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা ডাটাবেস

পাসপোর্ট সার্ভারে যুক্ত না হওয়া রহস্যজনক

কোটি কোটি টাকা খরচ করে শত শত কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে রোহিঙ্গাদের ডাটাবেস তৈরি করা হলেও তা পাসপোর্ট অধিদফতরের সার্ভারে যুক্ত করা হয়নি। ফলে রোহিঙ্গাদের পক্ষে অসৎ পাসপোর্ট কর্মচারী ও তদন্তকারীদের উৎকোচের বিনিময়ে কিনে নিয়ে ভুয়া পরিচয়ে পাসপোর্ট করা সম্ভব হচ্ছে। স্মর্তব্য, ২০১৭ সালের আগস্টে রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক ডাটাবেস তৈরি শুরু করা হয়। দুই বছরের মধ্যে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ১১ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গাকে নিবন্ধনের আওতায় আনা সম্ভব হলেও এ পর্যন্ত তা পাসপোর্ট অফিসের ডাটাবেসের সঙ্গে যুক্ত করা না হওয়ায় মিয়ানমার থেকে আসা উদ্বাস্তুদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এ পর্যন্ত বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশি সেজে পাসপোর্ট নিয়েছে। তার মধ্যে অর্ধশতাধিক রোহিঙ্গা নাগরিককে ভুয়া পাসপোর্ট করার সময় অথবা বিদেশে যাওয়ার সময় বিমানবন্দর থেকে আটক করে আশ্রয় শিবিরে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তবে কতসংখ্যক রোহিঙ্গা পাসপোর্ট পেয়েছে এবং অন্য দেশে পাড়ি জমাতে পেরেছে সে তথ্য কারোর জানা নেই। রোহিঙ্গাদের পরিচয় শনাক্ত করতে সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে ডাটাবেস তৈরির প্রকল্প হাতে নিয়েছিল। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়। পাসপোর্ট অধিদফতরের দু-একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কারণে পাসপোর্ট অফিসের সার্ভারে রোহিঙ্গাদের ডাটাবেস যুক্ত করা হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, দেশি-বিদেশি অপশক্তির ইন্ধনে পাসপোর্ট অধিদফতরের কোনো কোনো কর্মকর্তা উদ্দেশ্যমূলকভাবে রোহিঙ্গা ডাটাবেস পাসপোর্ট অফিসের সার্ভারে যুক্ত করতে টালবাহানা করছেন। এই সময় ক্ষেপণের অবসান ঘটিয়ে অতিসত্বর পাসপোর্ট সার্ভারের সঙ্গে রোহিঙ্গা ডাটাবেস যেমন যুক্ত করা দরকার, তেমন যাদের কারণে এ বিষয়টি বিলম্বিত হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। অন্ততপক্ষে মতলববাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাসপোর্ট অধিদফতর থেকে অপসারণের উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি ভুয়া পরিচয়ে কোনো রোহিঙ্গা বাংলাদেশি পাসপোর্ট করার চেষ্টা চালালে তাদের ধরে ক্যাম্পে ফেরত দেওয়ার বদলে কারাগারে পাঠানো কিংবা মিয়ানমারে পুশব্যাক করার কথা ভাবতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর