শুক্রবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

নিরাপদ সড়কের প্রত্যাশা

দৃঢ় মনোভাবের বিকল্প নেই

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের দেশ কাঁপানো আন্দোলনের পরও নিরাপদ হয়নি সড়ক। আন্দোলনের পর এক বছর অতিক্রম হলেও শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ দাবি পূরণ হয়নি। ফিরে আসেনি সড়ক পরিবহনে শৃঙ্খলা। বেপরোয়া যানবাহনের কারণে বরং দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। রাস্তায় ফিটনেসবিহীন গাড়ির অবাধ চলা গত এক বছরে যেমন বন্ধ হয়নি তেমন বন্ধ হয়নি লাইসেন্সবিহীন চালকদের দৌরাত্ম্য। নগর পরিবহনে বাসের প্রতিযোগিতা আগের মতোই রয়ে গেছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর প্রধানমন্ত্রী সড়ক নিরাপত্তায় বেশ কিছু পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার কিছু বাস্তবায়ন হয়েছে, অন্যগুলোর কাজ চলছে। স্মর্তব্য, ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই দুই বাসের রেষারেষির সময় রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে কুর্মিটোলা উড়ালসড়কের নিচে অপেক্ষারত শিক্ষার্থীদের ওপর উঠে যায় জাবালে নূর বাস। নিহত হন শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম। আহত হন আরও ১৩ জন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। ঘটনার পর ৩১ জুলাই পরিবহন-সংশ্লিষ্টদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর কার্যালয়ে ডেকে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি ট্রাফিকব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফেরানোর কঠোর নির্দেশ দেন। কিন্তু সে নির্দেশ বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্তরা কতটা করিৎকর্মার পরিচয় দিয়েছেন তা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। এক বছর আগের মতোই সরকার ও প্রশাসন পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের বেপরোয়া নেতাদের কাছে কার্যত জিম্মি কিনা সে সংশয় রয়ে গেছে। সরকারকে ক্ষমতাধর এই দুই অশুভ চক্রের সঙ্গে আপস করে চলতে হচ্ছে। ফলে সড়ক-নৈরাজ্য অবসানের স্বপ্নকল্প স্বপ্নই থেকে যাচ্ছে। মাস্তাননির্ভর পরিবহন সেক্টর নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সড়ক-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ মনোভাবের বিকল্প নেই। শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী যেই হোক, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় যারা জড়িত তাদের পরিবহন মালিকদের সঙ্গে গোপন গাঁটছড়া বাঁধার অপরাধবৃত্তি থেকে নিবৃত্ত হতে হবে। প্রশিক্ষণহীন ও লাইসেন্সবিহীন কেউ যাতে পরিবহনের চালকের আসনে বসতে না পারে তা নিশ্চিত করাও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর