শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ডলার সংকট কাটছে না

হুন্ডি বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে

ডলার সংকট দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ী সংকটে পরিণত হয়েছে। দেশে লাগামহীনভাবে ভোগ্যপণ্য ও বিলাসপণ্যের আমদানি ডলার সংকট অনিবার্য করে তুলছে। বিশেষ করে রপ্তানির তুলনায় আমদানির ক্ষেত্রে মচ্ছব চলায় ডলার ঘাটতি নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিল্পোদ্যোক্তারা মূলধনী পণ্য আমদানি করতে গিয়ে ডলারের জন্য হা-হুতাশ করছেন। ডলারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় শিল্প স্থাপনে খরচ বাড়ছে। তেল, আটা, চিনি ইত্যাদি খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে ইন্ধন জোগাচ্ছে। ডলারের বিপরীতে টাকার দাম হ্রাস পাচ্ছে। এ মূল্য হ্রাস সাধারণ মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে ও মূল্যস্ফীতিতে ইন্ধন জোগাচ্ছে। বর্তমানে টাকার বিপরীতে ডলার বিক্রি হচ্ছে ৮৪ থেকে ৮৭ টাকায়। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ডলার কেনাবেচার সর্বনিম্ন দর ছিল ৮৪ টাকা ৫০ পয়সা। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে এই দর ছিল ৮৫ থেকে ৮৭ টাকা। গত ছয় মাসে বিভিন্ন সময় বাজারে নগদ ডলারের ঘাটতি মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার বিক্রি করেছে। কয়েক বছর আগেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের দর নিয়ন্ত্রণের জন্য বাজার থেকে কিনে রিজার্ভ করেছে। লাগামহীন আমদানির প্রবণতায় এখন হয়েছে উল্টো পরিস্থিতি। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বাজারে ডলার সরবরাহ করতে হচ্ছে। দেশে কয়েক বছর ধরেই আমদানির পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বাড়ছে আমদানি ব্যয়। ডলারের বাজারে যার প্রভাব পড়ছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে হুন্ডি কমাতে না পারায় দেশ থেকে অবৈধ উপায়ে ডলার পাচার ঠেকানো যাচ্ছে না। পরিণতিতে বাজারে ডলার সংকট কাটছে না। স্মর্তব্য, ডলারের দাম স্থিতিশীল রাখতে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রায় ৪০ কোটি ডলার বিক্রি করেছে। একই সময়ে বাজার থেকে কোনো ডলার তারা কেনেনি। গত অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিপুল পরিমাণ ডলার সরবরাহ করেছে খোলাবাজারে। তবে ২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে ১৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার বিক্রির বিপরীতে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ১৯৩ কোটি ১০ লাখ ডলার কিনেছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের দর নির্ধারণ করে না দিলেও অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হলে তা নিয়ন্ত্রণ করে। ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণে আমদানি খাতে লাগাম পরানোর পাশাপাশি হুন্ডি বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর