মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

রাজধানীর উন্নয়নে সমন্বয়হীনতা

সেবা সংস্থাগুলোকে এক ছাতার নিচে আনুন

ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী এবং দুনিয়ার অন্যতম মেগাসিটি। ১৭ কোটি মানুষের গর্বের অনুষঙ্গ এই মহানগরীকে সুন্দরভাবে সাজানোর জন্য সরকারের আগ্রহের অভাব নেই। কিন্তু ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটি সে আগ্রহ পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজধানীবাসীর সেবার জন্য ৫৬টি সংস্থা জড়িত। তাদের কাজের সমন্বয় না থাকায় নগরবাসী সত্যিকার অর্থে কতটা সেবা পায় তা প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়। সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় না থাকায় ঢাকা ইতিমধ্যে দুনিয়ার অন্যতম বসবাসের অযোগ্য নগরীতে পরিণত হয়েছে। ঢাকার উন্নয়ন ও নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে মহানগরীকে দুই সিটি করপোরেশনে ভাগ করা হলেও সেবা সংস্থাগুলোর ওপর সিটি মেয়রের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় তাদের পক্ষেও জনগণের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। রাজধানীতে সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে সিটি করপোরেশন নতুন রাস্তা, ফুটপাথ তৈরির পরের মাসেই তা কেটে সুয়ারেজ লাইন বসাচ্ছে ওয়াসা। কখনো রাস্তা খুঁড়ে বিটিসিএল নিয়ে যাচ্ছে টেলিফোনের লাইন। নাগরিক সেবা বাড়াতে সব সংস্থার মধ্যে সমন্বয় ঘটানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পরিপত্র জারি করা হলেও কোনো ইতিবাচক অগ্রগতি ঘটেনি। এ অবস্থায় গত বছর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব বরাবর একটি অভিযোগপত্র দেন। কিন্তু তাতেও জট খোলেনি। মেয়ররা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হওয়ায় নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা এবং জবাবদিহি করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অন্য সেবা সংস্থাগুলোর সে দায়বদ্ধতা নেই। সেবা সংস্থাগুলো সিটি করপোরেশনের আওতাধীন না হওয়ায় তারা মেয়রের নির্দেশনা মানতে বাধ্য নয়। রাজধানীর সেবা প্রদানকারী প্রতিটি সংস্থার প্রকল্প ও বরাদ্দ আলাদা। রাজধানীর উন্নয়নে স্থানীয় সরকার-স্বরাষ্ট্র-রেল-বিদ্যুৎ ও জ্বালানি-গণপূর্ত-সড়ক ও যোগাযোগ এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় প্রত্যক্ষভাবে কাজ করে। এ ছাড়া অর্থ, পরিকল্পনাসহ আরও কয়েকটি মন্ত্রণালয় পরোক্ষভাবে ঢাকার উন্নয়নের অংশীদার। সমন্বয়হীনতার কারণে এ সংস্থাগুলোর সেবা যথার্থভাবে নগরবাসীর কাজে আসছে না। রাজধানীর উন্নয়নও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অচল নগরীতে পরিণত হচ্ছে ঢাকা; যা এড়াতে রাজধানীর সেবাদানকারী সব সংস্থাকে এক ছাতার নিচে আনতে হবে।

সর্বশেষ খবর