শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

তলানিতে থাকা জাতীয় লজ্জার ঘটনা

বিশ্বের সেরা ১ হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় নেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সেরা তালিকার শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাজ্যের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। একসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অভিহিত করা হতো প্রাচ্যের অক্সফোর্ড। কালের বিবর্তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু নয়, বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার মান কোথায় পৌঁছেছে বিশ্বের সেরা ১ হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এ দেশের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ঠাঁই না পাওয়া তারই প্রমাণ। স্মর্তব্য, উচ্চশিক্ষাবিষয়ক লন্ডনভিত্তিক সাময়িকী ‘টাইমস হায়ার এডুকেশনস’ সম্প্রতি ‘ওয়ার্ল্ডস ইউনিভার্সিটি র‌্যাংকিং-২০২০’ প্রকাশ করেছে। বিশে^র ৯২টি দেশের ১ হাজার ৪০০ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে করা ওই র‌্যাংকিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১ হাজারের পরে স্থান পেয়েছে। র‌্যাংকিংটি প্রাতিষ্ঠানিক শিখনকর্ম দক্ষতা, গবেষণা, জ্ঞানগত সম্প্রসারণ ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদি ১৩টি সূচক ধরে মানদন্ডের বিচারে তৈরি করা হয়। এসবের মধ্যে শিক্ষার পরিবেশ, গবেষণার সংখ্যা ও সুনাম, প্রাতিষ্ঠানিক আয় এবং আন্তর্জাতিক যোগাযোগসংশ্লিষ্টতার বিষয় প্রাধ্যান্য পায়। র‌্যাংকিংয়ের দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছে ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এবং ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়। শীর্ষ দশে স্থান পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সাতটি যুক্তরাষ্ট্রের ও তিনটি যুক্তরাজ্যের। শিক্ষাদীক্ষায় যে জাতি শীর্ষে সে জাতিই বিশ্বপরিসরে এগিয়ে থাকে। শীর্ষ দশটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কটি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের হওয়ায় নিশ্চিত হয়েছে কেন তারা জ্ঞান-বিজ্ঞান ও উন্নয়নে সবার চেয়ে এগিয়ে। বিশ্বের সেরা ১ হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম না থাকা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার অধঃপতিত চিত্রই তুলে ধরেছে। এখন যারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষকতা করেন তাদের অনেকেই পদোন্নতির জন্য গবেষণা ও প্রকাশনার বদলে রাজনীতি করাকে সাফল্য অর্জনের পথ বলে বেছে নেওয়ায় শিক্ষকতার মান ক্রমান্বয়ে নিচে নামছে। শিক্ষার মান যে কী অবস্থায় পড়ছে তা সহজেই অনুমেয়। এই জাতীয় লজ্জার ঘটনা কাঁধ থেকে ঝেড়ে ফেলতে হলে শিক্ষাঙ্গনকে নোংরা রাজনীতি থেকে রেহাই দিতে হবে। রাজনীতি নয়; গবেষণা, প্রকাশনা ও জ্ঞানচর্চায় শিক্ষকরা যাতে সময় দেন তা নিশ্চিত করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর