সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

রিজিকের মালিক একমাত্র আল্লাহ

মুহম্মাদ ওমর ফারুক

রিজিকের মালিক একমাত্র আল্লাহ

মহান আল্লাহ পৃথিবীর সবল-দুর্বল, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, নারী-পুরুষ, বুদ্ধিমান-বোকা সবাইকে রিজিক দান করেন। সমস্ত প্রাণী তাঁর দয়ার ওপর নির্ভরশীল। কাউকে না খাইয়ে রাখেন না। যে আল্লাহকে মানে এবং তাঁর প্রতি বিশ্বাস রাখে তাকে যেমন রিজিক দান করেন, তেমনি যে বিশ্বাস করে না তাকেও তিনি রিজিক দান করেন। মুসলমান-অমুসলমান সবাই মহান সৃষ্টিকর্তার দয়ার চাদরে বেষ্টিত। রিজিক যদি শুধু ইমানদারদের দিতেন তাহলে সব অমুসলিম না খেয়ে মারা যেত। আবার যদি শুধু মানুষকে দিতেন তাহলে সব প্রাণী না খেয়ে মারা যেত। আর মানুষের মধ্যে রিজিক যদি কেবল শিক্ষিতদের জন্য নির্ধারিত হতো তাহলে অশিক্ষিতরা বেঁচে থাকতে পারত না। বোঝা গেল, আল্লাহ রিজিক সব সৃষ্টজীবের জন্য নির্ধারণ করে রেখেছেন এবং একজনের অসিলায় আরেকজনকে তিনি রিজিক দান করেন। বান্দা যখন আল্লাহর আনুগত্য করে এবং তাঁর ওপর ভরসা রাখে ও দোয়া করে, তখন আল্লাহ সেই বান্দার রিজিকের দায়িত্ব নিয়ে নেন। হজরত আবু হোরায়রা (রা.)  থেকে একটি ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘একবার এক ব্যক্তি তার পরিবারবর্গের কাছে এসে যখন দেখল যে, তারা ক্ষুধায় ও উপবাসে কাতর হয়ে পড়েছে, তখন সে এ দৃশ্য সহ্য করতে না পেরে মাঠের দিকে বের হয়ে গেল। অতঃপর তার স্ত্রী যখন দেখল যে, তার স্বামী পরিবারের দুরবস্থা দেখে লজ্জিতভাবে রুজির তালাশে বের হয়ে গেছে, তখন সে আটা পেষার চাক্কির কাছে গিয়ে এক চাক্কি আরেক চাক্কির ওপর রাখল। তারপর চুলার কাছে গিয়ে তাতে আগুন জ্বালাল। এরপর দোয়া করতে লাগল- হে আল্ল­াহ! আমাদের রিজিক দান কর। অতঃপর সে নিচের চাক্কিটির প্রতি লক্ষ্য করে দেখল যে, তা ভর্তি হয়ে রয়েছে। (হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবি বলেন,) এরপর সে রুটি তৈরি করার জন্য চুলার কাছে গিয়ে দেখল যে, চুলার ওপর রাখা পাত্রটি রুটি দ্বারা পরিপূর্ণ রয়েছে। (হাদিস বর্ণনাকারী বলেন,) এরপর স্বামী ঘরে ফিরে তার স্ত্রীকে লক্ষ্য করে বলল, আমি চলে যাওয়ার পর তোমরা কি কারও কাছ থেকে কিছু পেয়েছ? স্ত্রী বলল, হ্যাঁ। আমরা আমাদের প্রতিপালকের কাছ থেকেই পেয়েছি। অতঃপর লোকটি চাক্কির কাছে গিয়ে তা খুলে রাখল। অতঃপর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গিয়ে বিষয়টি বর্ণনা করল। তিনি বললেন, যদি ওই ব্যক্তি চাক্কি খুলে রাখত তবে কিয়ামত পর্যন্ত তা ঘুরতে থাকত এবং সেখান থেকে আটা বের হতো।’ মিশকাত। রিজিক নিয়ে চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার কিছু নেই। যা ভাগ্যে আছে তা আমাদের জীবনে আসবেই। এ বিষয়ে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘বান্দার রিজিক বান্দাকে এভাবে তালাশ করতে থাকে, যেভাবে তার মৃত্যুর সময়টি তাকে তালাশ করে।’ মিশকাত।

        লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

 

সর্বশেষ খবর