মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

পিয়াজের গায়ে আগুন

আমদানিনির্ভরতার অবসান হোক

পিয়াজের গায়ে হঠাৎ করেই লেগেছে মূল্যবৃদ্ধির আগুন। মাত্র এক দিনের ব্যবধানে এই নিত্যপণ্যটির দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ২০ টাকা। ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে পিয়াজের মূল্যবৃদ্ধি রোধে সে দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রপ্তানিমূল্য তিন গুণ করায় তার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের বাজারে। গত এক মাস যাবৎ দেশের বাজারে ভারতীয় ও বাংলাদেশি পিয়াজ প্রায় একই দামে বিক্রি হয়েছে। বাংলাদেশের পিয়াজের মান ভালো হওয়ায় ভারতের হাইব্রিড জাতীয় পিয়াজের চাহিদা ছিল একেবারে নগণ্য। সালাদ হিসেবে যারা পিয়াজ ব্যবহার করেন তারাই ছিলেন মূলত ভারতীয় পিয়াজের ক্রেতা। কিন্তু ভারত সরকার রপ্তানি নিরুৎসাহিত করতে পিয়াজের রপ্তানিমূল্য তিন গুণ করার সঙ্গে সঙ্গে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশি পিয়াজ মজুদকারী ও ব্যবসায়ীরা। সন্দেহ নেই, পিয়াজের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেকাংশে ভারতের ওপর নির্ভরশীল। প্রতিবেশী দেশটিতে এ বছর ব্যাপকভাবে বন্যা আঘাত হানায় পিয়াজের উৎপাদন মার খেয়েছে; যা বাংলাদেশের জন্যও সংকট সৃষ্টি করেছে। ব্যবসায়ীরা অবশ্য ইতিমধ্যে মিয়ানমারসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পিয়াজ আমদানি শুরু করেছেন। মিয়ানমারে পিয়াজের দাম বেশ কম থাকায় এবং দ্রুত আমদানির সুযোগ থাকায় ইতিমধ্যে চট্টগ্রামের বাজারে তা আসা শুরু করেছে। চীন থেকেও পিয়াজ আমদানির উদ্যোগ চলছে। দেশে চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ায় প্রতি বছরই বিপুল পরিমাণ পিয়াজ আমদানি করতে হয়। ভারতে কোনো কারণে উৎপাদন মার খেলে সংকট অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়। এই সাংবার্ষিক সংকটের অবসানে দেশে হাইব্রিড জাতীয় পিয়াজ উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া দরকার। পাশাপাশি পিয়াজ সংরক্ষণের সুষ্ঠু ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। তাহলে একদিকে যেমন বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে তেমন ভোক্তারা সংকট থেকে রেহাই পাবেন। বর্তমানে এ সবজির বাজারে যে অস্থিরতা চলছে তা কাটিয়ে উঠতে মিয়ানমার ও চীন থেকে পিয়াজ আমদানির উদ্যোগ জোরদার করা জরুরি। বাজার নিয়ন্ত্রণে সেটিই হবে প্রকৃষ্ট পথ।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর