সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

গলার কাঁটা হুন্ডি

চোখ-কান খোলা রাখতে হবে

সরকারের নানামুখী পদক্ষেপে হুন্ডির পরিমাণ হ্রাস পেলেও এখনো তা দেশের অর্থনীতির জন্য এক বড় সমস্যা। গলায় বিঁধে থাকা হুন্ডি নামের কাঁটা কিছুতেই নামানো যাচ্ছে না। সহযোগী দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হুন্ডি কারবারিদের অপতৎপরতায় প্রবাসীদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রার এক বড় অংশ দেশে আসছে না। হুন্ডি কারবারিদের স্থানীয় প্রতিনিধিরা প্রবাসীর স্বজনের কাছে সরাসরি কিংবা তার মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে বিদেশ থেকে পাঠানো অর্থ স্থানীয় মুদ্রায় পৌঁছে দিচ্ছে। মোবাইলে বিশেষ অ্যাপস ব্যবহার করে চালানো হচ্ছে এই কার্যক্রম। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক জরিপে হুন্ডির মাধ্যমে প্রায় পাঁচ শতাংশ রেমিট্যান্স আসার তথ্য দেওয়া হয়েছে। ২০১৬ সালে পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপে অবশ্য হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স আসার হার ছিল প্রায় ২২ শতাংশ। সে হিসাবে হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ লেনদেন হ্রাস পেয়েছে। তবে এ আপদ জিইয়ে আছে প্রবাসী এবং তাদের স্বজনরা বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানোকে ঝামেলা মনে করার কারণে। সবারই অভিযোগ, বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে খরচ ও সময় বেশি লাগে। হুন্ডির মাধ্যমে পাঠালে মুদ্রার বিনিময় হার বেশি পাওয়া যায়। প্রবাসীর পাঠানো অর্থ প্রায় সঙ্গে সঙ্গে পেয়ে যায় স্বজনরাÑ যেটি বৈধভাবে পাঠালে সম্ভব হয় না। এসব কারণে প্রবাসীদের অনেকেই এখনো বৈধপথে না গিয়ে অবৈধ হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাঠাচ্ছেন।  হুন্ডি বন্ধে সরকার ইতিমধ্যে একটি তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চলতি বছর থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে দুই শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ জন্য বাজেটে তিন হাজার ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দও রাখা হয়েছে। তবে এর সুফল কতটা অর্জিত হবে তা নির্ভর করছে প্রণোদনা দেওয়ার কর্মসূচি বাস্তবায়নের ওপর। হুন্ডির দৌরাত্ম্য জিইয়ে থাকার একটি প্রধান কারণ প্রবাসীদের একাংশ অবৈধভাবে বিভিন্ন দেশে অবস্থান করায় তাদের পক্ষে বৈধ পথে অর্থ পাঠানো অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। এ সমস্যার সমাধানের একমাত্র পথ সংশ্লিষ্ট প্রবাসীদের বৈধতা অর্জনের ব্যবস্থা করা। কিন্তু সে ক্ষেত্রটিও সহজ নয়। দেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচার অর্থনীতির জন্য সর্বনাশ ডেকে আনছে। এ বিষয়ে সরকারকে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর