সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

নিজেকেই শাস্তি দেয় আত্মহত্যাকারী

শাহ মাহমুদ হাসান

নিজেকেই শাস্তি দেয় আত্মহত্যাকারী

আত্মহত্যা হলো আত্মবিশ্বাস ও ইমান পরিপন্থী একটি বিকৃত সিদ্ধান্ত। আল্লাহর আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে মানব জীবনে একটি কৃত্রিম সংকট ও বিপর্যয় সৃষ্টি করা। আত্মহত্যাকারী মনে করে সে নিজের হাতে নিজের জীবনের সব কর্মকান্ডের পরিসমাপ্তি ঘটাবে। মূলত আত্মহনন জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটায় না। বরং সে নিজেকে ব্যর্থতা ও বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেয়। এ ব্যর্থতা ও বিপর্যয় শুধু ইহকালের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না বরং তা আসল জীবন পরকালকেও ধ্বংস করে দেয়। আত্মহত্যার মাধ্যমে একটি জীবনই শুধু নষ্ট হয় না, প্রতিটি আত্মহত্যার বিরূপ প্রভাব পড়ে পরিবারের ওপর, আত্মহত্যাকারীর বন্ধু-বান্ধবদের ওপর। একটি মাত্র আত্মহত্যার ঘটনা একটি পরিবারের অন্য সদস্যদেরও সুখ-শান্তি কেড়ে নেয়। যখন মানুষের জ্ঞান, প্রজ্ঞা, উপলব্ধি ও অনুধাবনশক্তি লোপ পায়, নিজকে অসহায়-ভরসাহীন মনে হয় তখনই সে আত্মহত্যা করে বসে। জীবনের প্রতি হতাশা ও সংকটের সময় যাতে কারও মনে আত্মহত্যার পরিকল্পনা না আসে সে জন্য আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় কষ্টের সঙ্গে স্বস্তি রয়েছে।’ আল কোরআন। যত বিপদ আসুক মুমিন কখনো ভেঙে পড়বে না। ইমানদার হবে ইস্পাতকঠিন ও পাহাড়ের  মতো অটল-অবিচল। আল্লাহ ধৈর্যধারণ করাকে সাহসিকতার কাজ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘অবশ্যই যে সবর করে ও ক্ষমা করে নিশ্চয় এটা সাহসিকতার কাজ।’ সূরা শূরা, আয়াত ৪৩। নিজেদের হত্যা করতে নিষেধ করে আল্লাহ বলেছেন, ‘আর তোমরা নিজেরা নিজেদের হত্যা কোরো না।’ সূরা নিসা, আয়াত ২৯। ইসলামে আত্মহত্যা নাজায়েজ এবং তার পরিণতি জাহান্নাম। হজরত আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিজেকে পাহাড়ের ওপর থেকে নিক্ষেপ করে আত্মহত্যা করে, সে জাহান্নামের মধ্যে সর্বদা ওইভাবে নিজেকে নিক্ষেপ করতে থাকবে। যে ব্যক্তি বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে সেও জাহান্নামের মধ্যে সর্বদা ওইভাবে নিজ হাতে বিষপান করতে থাকবে। যে কোনো ধারালো অস্ত্র দ্বারা আত্মহত্যা করেছে তার কাছে জাহান্নামে সেই ধারালো অস্ত্র থাকবে যার দ্বারা সে সর্বদা নিজের পেটকে ফুঁড়তে থাকবে।’ বুখারি।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর