শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
ইতিহাস

কঙ্গোর গণহত্যা

বেলজিয়ামের রাজা দ্বিতীয় লিওপোল্ড ইতিহাসে কুখ্যাত হয়ে আছেন আফ্রিকান দেশ কঙ্গোয় নৃশংস গণহত্যার জন্য। বেলজিয়ামের রাজা আফ্রিকার দেশ কঙ্গো কিনে নিয়ে সে দেশের জনগণকে দাসে পরিণত করেন। এই জঘন্য অপকর্ম ঢাকা দেওয়ার জন্য তিনি লিওপোল্ড ইন্টারন্যাশনাল আফ্রিকান সোসাইটি নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। সেই সংগঠনের বাহ্যিক রূপ ছিল সমাজ সংস্কার। কিন্তু সাধুবেশে শয়তানের ভূমিকা পালনকারী ওই সংগঠনের আড়ালে চলে দাস ব্যবসা। কঙ্গোর মানুষদের দিয়েই তিনি সে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ লুণ্ঠন শুরু করেন। কেউ তার লুণ্ঠনতন্ত্রের বিরোধিতা করলে তার ওপর নেমে আসত ভয়াবহ অত্যাচার, অঙ্গচ্ছেদ, মৃত্যুদ-। এসব অপকর্ম তিনি করতেন তার নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনীর দ্বারা। এ বাহিনীর নাম ছিল ‘ফোর্স পাবলিক’। রাজা লিওপোল্ডের নির্দেশে ফোর্স পাবলিকের অফিসাররা জনপ্রতি হাতির দাঁত ও রাবার সংগ্রহের কোটা ধার্য করে দিতেন। এ কোটা পূরণে ব্যর্থ হলে সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল মৃত্যুদ-। কুমিরের চামড়ার চাবুক ছিল সর্বনিম্ন শাস্তি। রাজা লিওপোল্ডের নৃশংসতায় নিহত হয়েছিল কঙ্গোর প্রায় ১ কোটি মানুষ। মৃত্যুদন্ডাদেশ কার্যকরের জন্য সেনাবাহিনীর গুলি যাতে অপচয় না হয় সেজন্য প্রতি গুলির বিপরীতে একটি করে মানুষের কাটা কব্জি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হতো। মনে করা হতো হাত কাটার ভয়ে কেউ হাতির দাঁত বা রাবার সংগ্রহে আলসেমি করবে না। রোমহর্ষক পদ্ধতিতে একটা কুফল দেখা দিয়েছিল, বনের ভিতর থেকে রাবার সংগ্রহের তুলনায় কাটা হাত সংগ্রহ করা অনেকটা সহজ ছিল। ফলে কঙ্গোলিজদের মধ্যে যারা দুর্বৃত্তপনায় অভ্যস্ত ছিল, তারা অন্যদের ওপর আক্রমণ করে পরাস্ত লোকদের হাত কেটে জমা দিত।

 

 

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর