শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
ইতিহাস

সিকানদার শাহ

সুলতান ইলিয়াস শাহের মৃত্যুর পর তার বড় ছেলে সিকানদার শাহ সিংহাসনে আরোহণ করেন। রাজ্যের আমির ও সেনাপতিরা সিকানদার শাহকে সিংহাসনে আরোহণের ব্যাপারে যথেষ্ট সহায়তা করেছিলেন। ফলে সিংহাসন নিয়ে কোনো রক্তপাত ঘটেনি। ফিরোজ শাহ তুঘলক যখন বঙ্গে অভিযান করেন, তখন সিকানদার শাহ পান্ডুয়ার শাসনভার লাভ করেন। এ সময়ই তিনি ফিরোজ শাহের হাতে বন্দী হন এবং পরে ইলিয়াস শাহ ও ফিরোজ শাহের সম্পাদিত চুক্তির শর্তানুযায়ী তিনি মুক্তিলাভ করেছিলেন। অতঃপর তিনি পিতার অনুমতিক্রমে সোনারগাঁ শাসন করতে থাকেন। ১৩৫৮ খ্রিস্টাব্দে ইলিয়াস শাহের মৃত্যু হলে তিনি বাংলার সিংহাসনে উপবিষ্ট হন। সিকানদার শাহ তার পিতার মতো যোগ্য, পরাক্রমশালী, সাহসী এবং প্রজাহিতৈষী নরপতি ছিলেন। সিংহাসনে আরোহণ করে তিনি জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা সংরক্ষণ করেন। দিল্লির সঙ্গে বিবাদ করে স্বীয় ক্ষমতা সুদৃঢ় করা কিংবা অক্ষুণ্ন রাখা সম্ভব নয়, তা তিনি বিলক্ষণ বুঝেছিলেন। তাই সিংহাসনে আরোহণের পরই তিনি আলম খান নামক জনৈক রাজদূতকে দিল্লির দরবারে পাঠিয়েছিলেন। এর কয়েক মাস পর তিনি দিল্লির রাজদূত মালিক সাইফুদ্দিনকে পাঁচটি হাতি উপঢৌকন দিয়ে দিল্লির রাজদরবারে পাঠান। দিল্লির সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রাখাই ছিল সিকানদার শাহের উদ্দেশ্য। কিন্তু তার সব প্রচেষ্টা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়। ১৩৫৩-৫৮ খ্রিস্টাব্দে সুলতান ফিরোজ শাহ বঙ্গের বিরুদ্ধে অভিযান করেন। সিকানদার শাহ পিতার কৌশল অনুসরণ করে একডালা দুর্গে আশ্রয় নিলে একডালা দুর্গ অবরুদ্ধ হয়। দিল্লির সুলতান দুর্গ অধিকার করতে ব্যর্থ হল। অবশেষে ফিরোজ তুঘলক ও সিকানদার শাহের মধ্যে সন্ধি হয়। সন্ধির শর্তানুসারে স্থির হলো- ক. ফিরোজ শাহ তুঘলক যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ হিসেবে সিকানদার শাহের কাছ থেকে ৪০টি হাতি ও অনেক মূল্যবান উপঢৌকন লাভ করবেন। খ. জাফর খানকে সোনারগাঁয়ে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে। গ. সিকানদার শাহ দিল্লিতে নিয়মিত বার্ষিক কর প্রদান করবেন। চুক্তি সম্পাদনের পর ফিরোজ শাহ তুঘলক দিল্লিতে প্রত্যাবর্তন করেন।

জাফর খান

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর