আকাশের নীল আর সমুদ্রের নীল যেখানে মিলেমিশে একাকার, তীরে বাঁধা নৌকা, নান্দনিক নারিকেল গাছের সারি আর ঢেউয়ের ছন্দে মৃদু হাওয়ার কোমল স্পর্শ- এটি বাংলাদেশের প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের সৌন্দর্য বর্ণনারুদ্র প্রয়াস। বালু, পাথর, প্রবাল কিংবা জীববৈচিত্র্যের সমন্বয়ে জ্ঞান আর ভ্রমণপিপাসু মানুষের জন্য অনুপম অবকাশ কেন্দ্র সেন্টমার্টিন। স্বচ্ছ পানিতে জেলি ফিশ, হরেক রকমের সামুদ্রিক মাছ, কচ্ছপ, প্রবাল বিশ্ব রহস্যে জীবন্ত পাঠশালায় পরিণত করেছে সেন্টমার্টিন ও সংলগ্ন এলাকাকে। এটি বাংলাদেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ। কক্সবাজার শহর থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে সাগর বক্ষের একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ সেন্টমার্টিন। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। আয়তন ১৭ বর্গকিলোমিটার। টেকনাফ থেকে ট্রলারে, লঞ্চে কিংবা জাহাজে যেতে লাগে দুই থেকে সোয়া দুই ঘণ্টা। এর জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ৬ হাজার। নারিকেল, পিয়াজ, মরিচ, টমেটো, ধান এই দ্বীপের প্রধান কৃষিজাত পণ্য। অধিবাসীদের প্রায় সবারই পেশা মাছ শিকার। তবে ইদানীং পর্যটনশিল্প বিকাশের ফলে অনেকেই রেস্টুরেন্ট, আবাসিক হোটেল, কিংবা গ্রোসারি শপের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের মানুষ নিতান্ত সহজ-সরল। তাদের উষ্ণ আতিথেয়তা পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ। স্বল্প খরচে পর্যটকদের জন্য থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে এই দ্বীপে।

বাংলাদেশের যে কোনো স্থান থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে যেতে হবে কক্সবাজার। কক্সবাজার থেকে জিপে চড়ে টেকনাফ, টেকনাফ থেকে সি-ট্রাক, জাহাজ কিংবা ট্রলারে পৌঁছবেন সেন্টমার্টিন। প্রতিদিন চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি কক্সবাজারের উদ্দেশে ছেড়ে যায় দূরপাল্লার বেশ কিছু গাড়ি। ভাড়া লাগবে এসি বাসে ৬৫০-৭০০, নন এসি বাসে ৩৫০-৪০০ টাকা। কক্সবাজার তো গেলেন। তারপর বাসে ২৫-৩০ টাকা, ট্যাক্সিতে ৩০-৪০ টাকা অথবা রিজার্ভ মাইক্রোবাসে সেন্টমার্টিন যেতে ভাড়া লাগবে ৫০০-১০০০ টাকা (৮-১০ সিট)। প্রতিদিন সকাল থেকে কক্সবাজার-টেকনাফ রুটে চলে এসব গাড়ি। টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে প্রতিদিন সকাল থেকে আসা-যাওয়া করে সি-ট্রাক, কেয়ারী সিন্দবাদ ও নাফসি জাহাজ। চমৎকার এসব জাহাজের পাশাপাশি ট্রলারও চলে এই সমুদ্র রুটে। পছন্দসই বাহনে যেতে পারেন।

                আফতাব চৌধুরী