মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

সাইবার অপরাধ

আস্থার সংকট দূর করুন

দেশে সাইবার অপরাধ বেড়েই চলেছে। এর শিকার হয়েও সিংহভাগ মানুষ আইনের আশ্রয় নেয় না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো সম্পর্কে আস্থার সংকটের কারণে। সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাইবার অপরাধের মধ্যে পর্নোগ্রাফি-সংক্রান্ত অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় তিন গুণ। রবিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে প্রকাশিত ২০১৮ সালের জরিপে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে ২ দশমিক ২৫ শতাংশ লোক সাইবারে পর্নো হয়রানির শিকার হলেও এবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ০৫ শতাংশ। গবেষণায় বলা হয়েছে, বর্তমানে ভার্চুয়াল জগতে বাংলাদেশের প্রযুক্তি ব্যবহারকারীর মধ্যে ১১ ধাপে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। এগুলো হলো- ৬.৫১ শতাংশ ফোনে বার্তা পাঠিয়ে হুমকি, কপিরাইট আইন লঙ্ঘন, পণ্য বিক্রি করতে গিয়ে প্রতারণা, অনলাইনে কাজ করিয়ে নেওয়ার কথা বলে প্রতারণা ইত্যাদি। আক্রান্তের মধ্যে নারী ভুক্তভোগীর সংখ্যা আগের চেয়ে বেড়েছে ১৬.৭৭ শতাংশ। আর ভুক্তভোগীর ৮০.৬ শতাংশই সাইবার অপরাধের শিকার হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অভিযোগ করতে যায় না। মোবাইলে বার্তা পাঠিয়ে অপপ্রচারের ঘটনা কিছুটা কমলেও এখনো তা আশঙ্কাজনক। ভুক্তভোগীর মধ্যে ২২ দশমিক ৩৩ শতাংশই এ ধরনের অপরাধের শিকার হচ্ছে। আগের প্রতিবেদনে এ হার ছিল ২৭.০৭ শতাংশ। ছবি বিকৃত করে অনলাইনে অপপ্রচারের ঘটনাও রয়েছে আগের মতোই ১৫.৩৫ শতাংশ। এ ছাড়া দেশে অলনাইনে ই-কমার্সে প্রতারণার শিকার ৭.৪৪ শতাংশ। সাইবারে পর্নো অপরাধ এক বছরের ব্যবধানে তিন গুণ বৃদ্ধি পাওয়া নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক ঘটনা। সাইবার অপরাধের শিকারদের আইনের আশ্রয় না নেওয়া আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর প্রতি আস্থার সংকটের বিষয়টি প্রকটভাবে তুলে ধরেছে। আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর প্রতি আস্থা না থাকায় সাইবার অপরাধের সিংহভাগই তাদের নজরে আনা হচ্ছে না। প্রতিকার পাওয়ার বদলে আইনের আশ্রয় নিলে হয়রানির শিকার হতে হয়- এমন মনোভাব বদ্ধমূল হয়ে আছে জনমনে, সাইবার অপরাধীদের অপরাধ সংঘটনে তা প্রকারান্তরে মদদ জোগাচ্ছে। সাইবার অপরাধের লাগাম টানতে হলে সবকিছুর আগে আস্থার সংকট দূর করার উদ্যোগ নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর