বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

লোক দেখানো আমল কাজে আসবে না

মুহম্মাদ ওমর ফারুক

লোক দেখানো আমল কাজে আসবে না

লোক দেখানোর জন্য হলে বড় বড় আমলও বিফলে যাবে। এ বিষয়ে একটি হাদিস বিভিন্ন কিতাবে বর্ণিত হয়েছে। আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যে ব্যক্তিকে বিচারের জন্য পেশ করা হবে সে হবে একজন শহীদ। আল্লাহর এজলাসে তাকে উপস্থিত করা হবে। তারপর আল্লাহ তাকে প্রথমে (দুনিয়ার প্রদত্ত) নিয়ামতসমূহের কথা স্মরণ করিয়ে দেবেন। আর সেও তা স্মরণ করবে। এরপর আল্লাহ তাকে জিজ্ঞাসা করবেন, আচ্ছা এতসব নিয়ামতের কৃতজ্ঞতার বিনিময়ে দুনিয়ায় তুমি কী আমল করেছে? উত্তরে সে বলবে, আমি তোমার সন্তুষ্টির জন্য (কাফিরের সঙ্গে) লড়াই করেছি। এমনকি শেষ পর্যন্ত আমি শহীদ হয়েছি। তখন আল্লাহ বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ; বরং তুমি এ উদ্দেশ্যে লড়াই করেছ যেন তোমাকে বীর বাহাদুর বলা হয়। (আর তোমার অভিপ্রায় অনুসারে) তোমাকে দুনিয়ায় তা বলাও হয়েছে। তারপর তার ব্যাপারে আদেশ দেওয়া হবে, তখন তাকে উপুড় করে টেনে হিঁচড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। তারপর সেই ব্যক্তিকে বিচারের জন্য উপস্থিত করা হবে, যে নিজে দীনি ইলম শিক্ষা করেছে এবং অন্যকেও শিক্ষা দিয়েছে। আর আল কোরআন অধ্যয়ন করেছে (এবং অন্যকেও শিক্ষা দিয়েছে)। তাকে আল্লাহর দরবারে হাজির করা হবে। তাকে প্রথমে তার নিয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দেবেন এবং সেও তা স্মরণ করবে। তারপর আল্লাহতায়ালা তাকে জিজ্ঞাসা করবেন, এসব নিয়ামতের শুকরিয়া জ্ঞাপনার্থে তুমি কী আমল করেছ? উত্তরে সে বলবে, আমি নিজে স্বয়ং ইলম শিক্ষা করেছি এবং অন্যকেও শিক্ষা দিয়েছি এবং তোমার সন্তুষ্টির জন্য কোরআন অধ্যয়ন করেছি। তখন আল্লাহ বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ। আমার সন্তুষ্টির জন্য নয়; বরং তুমি এজন্য বিদ্যা শিক্ষা করেছ যেন তোমাকে বিদ্বান বলা হয়। তোমাকে (তোমার অভিপ্রায় অনুসারে) বিদ্বান ও কারি বলাও হয়েছে। তারপর (ফেরেশতাদের) তার সম্পর্কে আদেশ করা হবে সুতরাং তাকে উপুড় করে টানতে টানতে দোজখে নিক্ষেপ করা হবে। তারপর এমন এক ব্যক্তিকে বিচারের জন্য আল্লাহর দরবারে উপস্থিত করা হবে, যাকে আল্লাহ বিপুল ধনসম্পদ দান করে বিত্তবান বানিয়েছেন, তাকে আল্লাহ প্রথমে প্রদত্ত নিয়ামতসমূহের কথা স্মরণ করিয়ে দেবেন। আর সে তখন সব নিয়ামতের কথা অকপটে স্বীকার করবে। তারপর তাকে জিজ্ঞাসা করবেন, এই নিয়ামতের শুকরিয়ায় তুমি কী আমল করেছ? উত্তরে সে বলবে, যেসব ধনসম্পদ ব্যয় করলে তুমি সন্তুষ্ট হবে এমন একটি পথও আমি হাতছাড়া করিনি। সুতরাং তোমার সন্তুষ্টির জন্য তার সবকটাতেই আমি ধনসম্পদ ব্যয় করেছি। আল্লাহ বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ। আমার সন্তুষ্টির জন্য নয়; বরং তুমি এ উদ্দেশ্যে তা করেছিলে যাতে তোমাকে বলা হয় সে একজন দানবীর। তোমাকে (তোমার অভিপ্রায় অনুযায়ী দুনিয়ায়) দানবীর বলাও হয়েছে। তারপর (ফেরেশতাদের) তার সম্পর্কে বলা হবে। সুতরাং নির্দেশ মোতাবেক তাকে উপুড় করে টানতে টানতে দোজখে নিক্ষেপ করা হবে।’ মুসলিম।

                লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর