বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

সেই উপাচার্যের পদত্যাগ

এমন পদে ব্যক্তিত্বহীনরা বাঞ্ছনীয় নয়

গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন অবশেষে পদত্যাগ করে জাতিকে কৃতার্থ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মভূমিতে তাঁর নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পদে নিয়োগ করা হয়েছিল এই গুণী ব্যক্তিটিকে। উপাচার্য তথা শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের শ্রদ্ধা অর্জনের বিষয়টি উপেক্ষা করলেও নানা অনিয়ম-দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও নৈতিক স্খলনের অভিযোগে তিনি বিতর্কিত হয়ে ওঠেন দেশজুড়ে। শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চালালেও তিনি তার পদ আঁকড়ে থাকাকেই যথার্থ বলে ভেবেছেন। ‘তোরা যে যা বলিস ভাই আমার উপাচার্য পদ চাই’ মনোভাবে শিক্ষার্থীদের ধিক্কার সত্ত্বেও অটল ছিলেন পদত্যাগ না করার ব্যাপারে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ভিসিবিরোধী আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ইউজিসি। এ কমিটি রবিবার প্রতিবেদন দাখিল করে মন্ত্রণালয়ে। প্রতিবেদনে খোন্দকার নাসির উদ্দিনকে ভিসি পদ থেকে প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়। এর পরই সোমবার পদত্যাগপত্র জমা দেন বহুল আলোচিত ভিসি। রবিবার রাতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পুলিশ পাহারায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিন। ভিসির অপসারণের এক দফা দাবিতে ১২ দিন লাগাতার আন্দোলন চলার পর তার বুদ্ধির উদয় হয়। ভিসির পদত্যাগ সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে সৃষ্ট অসন্তোষের অবসান ঘটাবে- এমনটিই প্রত্যাশিত। একই সঙ্গে তা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য সতর্কবাণী হিসেবে উচ্চারিত হবেÑ আমরা এমনটিই দেখতে চাই। ভিসি নিয়োগে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যক্তিত্বহীন ও পরগাছা চরিত্রের লোক ঠাঁই পাওয়ায় দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থা যে দিন দিন অস্থির হয়ে উঠেছে এটি একটি ওপেন সিক্রেট। এ অস্থিরতা শিক্ষাঙ্গনের জন্য শুধু বিড়ম্বনাই ডেকে আনছে না সরকারের সুনামের জন্যও সমস্যা হয়ে দেখা দিচ্ছে। আমরা আশা করব, উপাচার্য নিয়োগে নব্বইয়ের দশক থেকে যে অধঃপতিত মানসিকতা থাবা বিস্তার করেছে তা রোধের চেষ্টা করা হবে। মোসাহেব ও চাটুকারদের বদলে সত্যিকারের গুণী ব্যক্তিদের বেছে নেওয়া হবে মর্যাদাবান এই পদটির জন্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর