বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ইসলামে জাগতিক কল্যাণকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে

মাওলানা আবদুর রশিদ

ইসলাম এমন এক জীবনব্যবস্থা, যা ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কল্যাণের জন্য মানুষকে আল্লাহ রব্বুল আলামিন ও রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশিত পথে চলার জন্য উদ্বুদ্ধ করে। বিশ্বের বিভিন্ন ধর্মমত অনুসারীদের পারলৌকিক কল্যাণের বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েছে। কিন্তু আল্লাহর জীবন বিধানে জাগতিক কল্যাণকেও সবিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আমরা প্রতিদিন যে সালাত আদায় করি তাতে জাগতিক ও পারলৌকিক কল্যাণের জন্য আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করি। আল কোরআনের সূরা আরাফের ১৫৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আমাদের জন্য নির্ধারিত কর দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ, আমরা তোমার কাছে ফিরে এসেছি।’ উপরোক্ত আয়াতে যে বিষয়টি বোঝানো হয়েছে তা হলো যারা আল্লাহর পথে ফিরে আসে বা আল্লাহর নির্দেশিত পথে থাকে, তাদের প্রতি মুহূর্তের প্রার্থনা হওয়া উচিত সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে ইহজাগতিক ও পারজাগতিক কল্যাণ চাওয়া। ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী মানুষ হলো এই পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি। এটি মানুষের জন্য এক বিরাট সম্মান। সূরা আনাসের ১৬৫ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষ এ পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি।’

আল্লাহ পৃথিবীতে মানুষকে তাঁর প্রতিনিধি বা খলিফা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে মনুষ্য সত্তাকে মহিমান্বিত করেছেন। যেমনটি করা হয়েছে মানুষকে সৃষ্টির সেরা ঘোষণা দিয়ে। মানুষের কর্তব্য আল্লাহ তাদের যে অসামান্য মর্যাদা দান করেছেন তার সম্মান রক্ষা করা। মানুষ পৃথিবীকে শান্তিময় করে পরস্পরের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তুলে আল্লাহর ইচ্ছা পূরণ করতে পারে। মানুষ যাতে সৎভাবে ও সুন্দরভাবে চলতে পারে সেজন্য আল্লাহ বিভিন্ন সময় আসমানি কিতাব নাজিল করেছেন। সর্বশেষ কিতাব হলো আল কোরআন। সর্বশেষ পয়গম্বর হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর এ কিতাব নাজিল হয়েছে। আল কোরআনের সূরা কালামের ৫২ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘কোরআন তো বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ।’ সূরা তাকভিরের ২৭ নম্বর আয়াতেও এ বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত হয়েছে। মানুষ কোরআন পাঠে কোন পথে চলতে হবে, কোন পথে চললে সে আল্লাহর সন্তুষ্টিবিধানে সমর্থ হবে সে সম্পর্কে জানতে পারে। কোরআন পাঠের মাধ্যমে একজন মানুষ নিজেকে আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে দাবি করার যোগ্যতার অধিকারী হয়। তার পক্ষে সহজ ও সরল পথ খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়। আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে মানুষ নিজে যেমন সুন্দরভাবে পৃথিবীতে জীবনযাপন করবে, তেমন সব জীবজন্তুও প্রকৃতির প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করবে- এমনটিই আল্লাহর নির্দেশ তথা কোরআনের শিক্ষা। আল্লাহ আমাদের তাঁর নির্দেশিত পথে চলার তাওফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর