শুক্রবার, ৪ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা সমস্যা

জাতীয় পরিচয়পত্র দানের সিদ্ধান্ত ইতিবাচক

রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দিতে রাজি হয়েছে মিয়ানমার। চীনের মধ্যস্থতায় জাতিসংঘে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে এ সম্মতি পাওয়া গেছে। মিয়ানমারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নাগরিক হিসেবে শনাক্তের পর রোহিঙ্গাদের পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। বুধবার রাজধানীর এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন জাতিসংঘ অধিবেশনে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বাংলাদেশের বেশ কিছু অর্জনের কথা তুলে ধরেন। বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে ২৪ সেপ্টেম্বর চীনের মধ্যস্থতায় বৈঠকে বসেন বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরানোর আনুষ্ঠানিক সংলাপে চীনকে সঙ্গে নিয়ে একটি ‘ত্রিপক্ষীয় যৌথ কার্যনির্বাহী’ ফোরাম গঠনে বৈঠকে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। রোহিঙ্গা সংকট যে মিয়ানমারের তৈরি এবং এর সমাধান তাদেরই করতে হবে, সে বিষয়টিতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রায় সব দেশ মত দিয়েছে বলেও জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বলেছেন, নাগরিকত্ব শনাক্তকরণে রোহিঙ্গাদের যে আবেদনপত্র পূরণ করতে দেওয়া হয়েছিল, তাতে ভুল থাকার কথা মিয়ানমার স্বীকার করেছে। শনাক্ত হওয়া নাগরিকদের যত দ্রুত সম্ভব ফিরিয়ে নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে মিয়ানমার। তারা রোহিঙ্গাদের নতুন ফরম দিতে এবং নাগরিকত্ব শনাক্ত হওয়ার পর সবাইকে জাতীয় পরিচয়পত্র দিতে রাজি হয়েছে। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে তাদের নাগরিক পরিচয়পত্র দানের সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে বড় অগ্রগতি। মিয়ানমার এত দিন রোহিঙ্গাদের তাদের দেশের কোনো জাতিগোষ্ঠী হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছিল। তাদের দাবি রোহিঙ্গারা বহিরাগত। তারা বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে আস্তানা গেড়েছে। অথচ বাস্তবতা হলো, রোহিঙ্গারা কয়েক পুরুষ ধরে আরাকান বা আজকের রাখাইনে বসবাস করছে। এমনকি রাখাইনে মিয়ানমার বা বার্মার আধিপত্য প্রতিষ্ঠার আগে থেকে রোহিঙ্গারা সে দেশে বসবাস করছে। মিয়ানমারের স্বাধীনতা সংগ্রামেও রোহিঙ্গারা সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ কোনো পক্ষ না হলেও অনর্থক ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে। দুই প্রতিবেশী দেশের সুসম্পর্কের জন্য হুমকি হয়ে উঠছে এ সমস্যা; যা কারও জন্যই কল্যাণকর নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর