শিরোনাম
রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ইসলাম জুয়া নিষিদ্ধ করেছে

মুফতি হেলাল উদ্দীন হাবিবী

ইসলাম জুয়া নিষিদ্ধ করেছে

নাচ, গান, মদ, জুয়া, কমেডি, কনসার্ট ও খেলাধুলাসমৃদ্ধ স্থানকে ক্যাসিনো বলা হয়। ক্যাসিনো ইতালিয়ান শব্দ। ১৬৩৮ সালে ইতালির ভেনিস শহরে রিডোট্ট নামে সর্বপ্রথম ক্যাসিনো প্রতিষ্ঠান চালু হয়। মূলত জুয়ার আধুনিক সংস্করণ হলো ক্যাসিনো। জুয়া বা ক্যাসিনো মানুষের আলোকিত জীবনকে অন্ধকারে ঢেকে দেয়। সাজানো সংসারকে করে তোলে বিষাদময়। সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক অবক্ষয়। জুয়ার বিষাক্ত ছোবলে ধ্বংস হয় দেশ, জাতি, সমাজ। ইসলাম জুয়ার অপরিণামদর্শী পরিণতি সম্পর্কে আগে থেকেই অবহিত। তাই হাজার বছর আগেই ইসলাম সব ধরনের জুয়াবাজি নিষিদ্ধ করেছে। বর্তমান সমাজে হাউজি, লটারি, বাজি ধরা, রিং নিক্ষেপ, তাস খেলা, পাশা খেলা, চাক্কি ঘোরানোসহ বিভিন্ন ধরনের জুয়ার প্রচলন পাওয়া যায়। এ ছাড়া ক্রিকেট ও ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে জুয়াবাজির প্রচলন আমাদের সমাজে আশঙ্কাজনকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে; যার পরিণামে সমাজের সব ক্ষেত্রে ছড়িয়ে পড়ছে নানা ধরনের অপরাধ। বিঘিœত হচ্ছে সামাজিক ও নৈতিক শিষ্টাচার। মহান আল্লাহ সব ধরনের জুয়াবাজিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আল কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘হে ইমানদারগণ! মদ, জুয়া, প্রতিমা ও ভাগ্যনির্ধারক শরসমূহ এসবই শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা তা বর্জন কর। আশা করা যায়, তোমরা সফলকাম হতে পারবে। নিশ্চয়ই শয়তান মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে চায় এবং আল্লাহর জিকির ও নামাজ থেকে তোমাদের মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। তবে কি তোমরা এগুলো থেকে নিবৃত্ত হবে না!’ সূরা মায়েদা, আয়াত ৯০-৯১। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মদ, জুয়া ও বাদ্যযন্ত্র হারাম করেছেন।’ বায়হাকি। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘পিতা-মাতার অবাধ্য সন্তান, জুয়ায় অংশগ্রহণকারী, খোঁটাদাতা ও মদ্যপায়ী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ দারেমি। প্রিয় পাঠক! জুয়া নামক মরণনেশা মানুষের জীবন-যৌবন, পরিবার ও সমাজকে ধ্বংস করে। এ ছাড়া জুয়ার অসংখ্য ক্ষতির দিক রয়েছে। নিচে কয়েকটি তুলে ধরা হলো : ১. জুয়ায় অভ্যস্ত ব্যক্তি কাজ-কর্ম ও শ্রম উপার্জনের ব্যাপারে অলস ও উদাসীন হয়ে পড়ে। ২. জুয়াড়ি ধীরে ধীরে তার পরিবার-পরিজন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ৩. জুয়ায় আসক্ত ব্যক্তি দ্রুত সময়ের মধ্যে মাদক, চুরি-ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে যায়। ৪. জুয়াড়ির মেজাজ সর্বদা রুক্ষ থাকে। ৫. জুয়া খেলার জয়পরাজয়কে কেন্দ্র করে কখনো কখনো খুন-খারাবির মতো ভয়াবহ অপরাধ সংঘটিত হয়। ইসলামের দৃষ্টিতে ক্যাসিনো বা জুয়ার মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ অবৈধ ও হারাম। আর হারাম বস্তু ভক্ষণ, পরিধান বা ভোগ করে ইবাদত করলে তা কবুল হয় না। অতএব জুয়া নামক এ ধরনের সর্বনাশা বিপদ থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে।

                লেখক : মুফাসসিরে কোরআন।

Email : [email protected]

সর্বশেষ খবর