রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

সড়ক নৈরাজ্য

অশুভ আঁতাত ভাঙতে হবে

বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো প্রবচনের অনুসরণ রাজধানীর সড়ক বিশৃঙ্খলাকে জিইয়ে রাখছে। এক মাসে সড়কশৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে প্রায় ২ লাখ চালককে শাস্তি দিয়েও কোনো সুফল অর্জিত হচ্ছে না। কারণ বিশৃঙ্খলার হোতা যারা তাদের রাখা হয় শাস্তির বাইরে। রাজধানীতে নিবন্ধিত যানবাহন প্রায় ১৫ লাখ। এর অর্ধেকের কাছাকাছি প্রায় ৭ লাখ মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন। রেজিস্ট্রেশনহীন মোটরসাইকেলের সংখ্যা খুব একটা কম নয়। ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনে প্রতিদিন ঢাকায় গড়ে মামলা হচ্ছে সাড়ে ৬ হাজার। তবু রাজধানীর সড়কে নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা দূর হচ্ছে না। যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রাজধানীর বিভিন্ন ফাঁকা সড়কে ট্রাফিক পুলিশকে চেকপোস্ট বসাতে দেখা গেলেও স্টপেজগুলোয় পুলিশের সামনেই নৈরাজ্যে মেতে উঠছে বাসগুলো। খুশিমতো লেন পরিবর্তন, মাঝরাস্তায় দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলা, বাসে বাসে ঠোকাঠুকি, আঁকাবাঁকা গাড়ি রেখে সড়ক বন্ধ করে দেওয়াসহ নিয়ম ভাঙার অবাধ প্রতিযোগিতা চলে। গত কয়েক বছরে রাজধানীতে বাস দুর্ঘটনায় যত প্রাণ ও অঙ্গহানি হয়েছে তার অধিকাংশই ঘটেছে বাস স্টপেজে। মাসে যানবাহন চালকদের বিরুদ্ধে প্রায় ২ লাখ মামলা দিলেও এটি নিতান্তই আইওয়াশ। বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরোর অনুসরণে আসল অপরাধীদের রাখা হচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। রাজধানীতে পুলিশকে মাসিক চাঁদা দিয়ে চলছে অসংখ্য ফিটনেস ও নিবন্ধনবিহীন যানবাহন। কাগজপত্রবিহীন এ গাড়িগুলো কাউকে পরোয়া করে না। সড়ক বিশৃঙ্খলার কুশীলবরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় মাসে ২ লাখ মামলা চাপিয়েও অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটছে না। রাজধানীতে ট্রাফিকশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হলে বেপরোয়া বাসচালকদের লাগাম টেনে ধরতে হবে। তাদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে হবে। সড়কশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় দেখভাল করার দায়িত্ব যাদের তাদের সঙ্গে বাস মালিক, চালকদের সংগঠন এবং রাজনৈতিক টাউটদের অশুভ জোট ভাঙতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর