সোমবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

চিকিৎসা শিক্ষা কেমন হওয়া উচিত

জাফরুল্লাহ চৌধুরী

চিকিৎসা শিক্ষা কেমন হওয়া উচিত

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী পরিষদের (একনেক) ২৭ আগস্টের সভায় গ্রামে যেতে অনিচ্ছুক ডাক্তারদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ক্ষোভ ও বিরক্তির সংবাদ পর দিনের বিভিন্ন পত্রিকায় বড় শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনাকে সমবেদনা জানাচ্ছি। নবীন চিকিৎসকগণ সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় উৎসাহিত না হওয়ার মূল কারণগুলো খোলামনে বিশ্লেষণ প্রয়োজন। অদ্যাপি কোনো সরকার নিবেদিত চিকিৎসকদের সম্মানদানের জন্য প্রদর্শনীয় কোনো উদ্যোগ নেননি। অতীতের সরকারগুলো কোনো কোনো চিকিৎসককে মন্ত্রী বানিয়েছেন, এমনকি রাষ্ট্রপতিও নিয়োগ করেছেন। আবার অপমান করে পদচ্যুতও করেছেন।

১৯৭২ সালে মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র ফিল্ড হাসপাতাল ‘বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতালে’র নাম পরিবর্তনের জন্য সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের কতিপয় স্বাস্থ্য বিভাগীয় আমলা সৃষ্ট সমস্যা সমাধানকল্পে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লেখককে ডেকে বলেন যে, বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতালের নাম পরিবর্তন করে অধ্যাপক ফজলে রাব্বী বা চক্ষু বিশেষজ্ঞ আলীম চৌধুরী হাসপাতাল কর। উত্তরে বলেছিলাম, নিবেদিত চিকিৎসকদের স্মরণীয়, বরণীয় করে রাখার দায়িত্ব সরকারের, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নয়। পরবর্তীতে তাঁর পরামর্শে মুক্তিযুদ্ধের ‘বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতালে’র পরিবর্তিত নাম হয় ‘গণস্বাস্থ্য ও পুনর্বাসন কেন্দ্র’। এ প্রকল্পের প্রসারের জন্য সাভারে বঙ্গবন্ধু প্রায় ৩০ একর জমি সরকারিভাবে ভূমিদখল করিয়ে দিয়েছিলেন।

ফরিদপুরে জন্মগ্রহণকারী তিনজন খ্যাতনামা চিকিৎসকের নাম বঙ্গবন্ধু প্রায় সময়ে উল্লেখ করতেন। তারা হলেন- ঢাকা মেডিকেল কলেজের পঞ্চাশ দশকের প্রিন্সিপাল ও হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট কর্নেল এম এম হক, ক্লিনিক্যাল সার্জারির অধ্যাপক কাজী সামসুল আলম, এফআরসিএস যিনি ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর পাশের বাড়ির বাসিন্দা ছিলেন। তিনি সামরিক শাসকদের রক্তচক্ষু অগ্রাহ্য করে চিকিৎসার জন্য বিপ্লবী ইলামিত্রকে কলকাতায় নিয়ে গিয়েছিলেন। অপরজন হচ্ছেন ধাত্রীবিদ্যার অধ্যাপক জোহরা বেগম কাজী। তিনি মহাত্মা গান্ধীর প্রিয়পাত্রী ছিলেন। জোহরা কাজীর পরিবার মধ্যপ্রদেশে সেবাগ্রামে গান্ধী পরিবারের সংলগ্ন বাড়িতে দীর্ঘ সময় বসবাস করেছেন এবং গান্ধী তনয় রামদাস গান্ধীর সঙ্গে জোহরা কাজীর নিবিড় বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল।

জাতীয় অধ্যাপক নুরুল ইসলাম বঙ্গবন্ধু পরিবারের একান্ত প্রিয়জন ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী মনে করতেন ‘খোদার পরে অধ্যাপক নুরুল ইসলাম’। এ ছাড়াও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ঢাকার নবাবপুরের ডা. এম এ করিম, পূর্ব পাকিস্তান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের ডা. টি (তৈয়ব) আলী, ধানমন্ডির ডা. মেহেরুন্নেসা এবং পাকিস্তান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন ও কমনওয়েলথ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক এসআইএমজি মান্নানকে বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। ¯œায়ুগ্রন্থি পেসিনিয়ান করপাসলসের (Pacinian Corpuscles)  নির্ণয়ক হিসেবে উপমহাদেশের একমাত্র চিকিৎসাবিজ্ঞানী এনাটমির অধ্যাপক এসআইএমজি মান্নানের অবদানের কথা চিকিৎসাবিজ্ঞানের মৌলিক গ্রন্থ ‘গ্রে’জ টেক্সট বুক অব এনাটমিতে উল্লেখ আছে। কলেরা-ডায়ারিয়া নির্ণয়ে ব্যবহৃত ‘মনসুর মিডিয়া’র উদ্ভাবক অধ্যাপক কে এ মনসুরকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু অতর্কিতে মহাখালীর পাবলিক হেলথ গবেষণাগারে উপস্থিত হয়ে।

আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম সন্তান জয় ওয়াজেদকে ১৯৭১ সালে প্রসব করিয়েছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনির অধ্যাপক এম এ ওয়াদুদ। গর্ভকালীন পুরো সময় সেবা দিয়েছিলেন তার স্ত্রী ডা. সুফিয়া খাতুন।

পঞ্চাশের দশকে বঙ্গবন্ধুর পরিবার সিদ্ধেশ্বরী স্কুল মাঠের পাশে পুকুর পাড়ে পুলিশ ইন্সপেক্টর আখতারুজ্জামানের টিনের বাড়ির এক অংশে নামমাত্র ভাড়ায় বসবাস করতেন। তখন বঙ্গবন্ধু পরিবারকে চিকিৎসাসেবা দিতেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বর্ণপদক প্রাপ্ত খ্যাতনামা পারিবারিক চিকিৎসক ডা. মন্মথ নাথ নন্দী, (ডা. এম এন নন্দী) এম বি (কলকাতা)। তিনি ৫০/৬০ এর দশকে সপরিবারে বসবাস করতেন ঢাকার ওয়ারীর র‌্যাংকিন স্ট্রিটে। ডা. নন্দীর জন্ম মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার তেরশ্রী ইউনিয়নের কুষ্টিয়া গ্রামে।

১৯৪০ এর দশকে সার্জারিতে উচ্চশিক্ষার জন্য ইউরোপের পথে রওনা হয়ে বোম্বাই পৌঁছার পর কমিউনিস্ট পার্টির নির্দেশে ডা. নন্দী ইউরোপ যাত্রা মাঝপথে স্থগিত করে রিভার স্টিম নেভিগেশনের স্টিমশিপে গোয়ালন্দে পৌঁছলেন এবং সেখান থেকে বজরা নৌকায় মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে উপস্থিত হলেন। কী অপূর্ব আত্মত্যাগ। বাংলার পঞ্চাশের মন্বন্তরের সময় তিনি লঙ্গরখানা খোলেন ও বিনা পয়সায় চিকিৎসাসেবা দেন। পঞ্চাশ-ষাটের দশকে ঢাকা শহরের প্রায় সব উচ্চ ও মধ্যবিত্ত এবং দরিদ্র পরিবার তার চিকিৎসা পেয়েছেন নামমাত্র ও বিনা ফিতে।

নিবেদিত চিকিৎসকদের সম্মান দিন।

মানিকগঞ্জের কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপনের জন্য ১, হাজার ৫৭ কোটি টাকা সরকারি অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। কী কারণে সরকারি অর্থে নির্মিতব্য মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ তার নামে উৎসর্গিত হলো অনুগ্রহ করে জানাবেন কি? কর্নেল মালেকের স্বাস্থ্য খাতে কী অবদান আছে? কর্নেল মালেকের সন্তান জাহিদ মালিক দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন এটাই কি মূল কারণ!

মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজের নাম হওয়া বাঞ্ছনীয় ডা. এম এন নন্দী মেডিকেল কলেজ। ডা. নন্দীর মতো নিবেদিত পারিবারিক চিকিৎসক বিরল। তার আদর্শ ও কর্মনিষ্ঠায় তরুণ চিকিৎসকরা অনুপ্রাণিত হবেন।

প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের নাম ডা. জোহরা কাজী মেডিকেল কলেজ এবং পাবনা মেডিকেল কলেজের নাম অধ্যাপক ফজলে রাব্বী মেডিকেল কলেজ করার প্রস্তাব অনুমোদন করিয়েছিলেন যা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে জাতীয় অধ্যাপক নুরুল ইসলাম, শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম আর খান ও কার্ডিওলজির অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার এম এ মালিকের এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ চত্বরে অধ্যাপক কে এস আলমের ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ চত্বরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক ডা. এম এ মোবিনের ভাস্কর্য স্থাপন করা হলে নতুন প্রজন্মের চিকিৎসকরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অনুপ্রাণিত হবেন। উল্লেখ্য, কার্ডিয়াক সার্জারির আকর্ষণীয় পদ ছেড়ে ডা. এম এ মোবিন মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে বিলেত থেকে এসে বাংলাদেশ ত্রিপুরা সীমান্তে বিশ্রামগঞ্জে ৪৮০ শয্যার বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল গড়ে তুলেছিলেন। শব ব্যবচ্ছেদ মিলনায়তনে অধ্যাপক এসআইএমজি মান্নানের আবক্ষ ভাস্কর্য ভবিষ্যতের চিকিৎসকদের মানবিক হতে অনুপ্রাণিত করবে।

মেডিকেল কারিকুলামের যুগোপযোগী সংস্কার : পাঁচ বছর মেয়াদি এমবিবিএস কোর্সে মাত্র ১৫ দিন সরজমিনে কমিউনিটি মেডিসিন অধ্যয়নের জন্য বরাদ্দ আছে যা ছাত্ররা সাধারণত কক্সবাজার ও কুয়াকাটা ভ্রমণ করে ব্যয় করে। ছাত্রদের সঙ্গে ন্যূনতম সংখ্যক শিক্ষক থাকেন না।

বর্তমান কারিকুলামে সামাজিক শ্রেণিবিন্যাস, স্কুল শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য, পেশাজনিত স্বাস্থ্য সমস্যা (Occupational Health) ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ ও উৎপাদন ব্যয় এবং স্বাস্থ্য খাতের অর্থনীতি (Economics of Health Care) পড়ানো হয় না বিধায় ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা সহজে চিকিৎসকদের প্রভাবিত করতে পারেন। দ্রুত পুঁজিবাদের বিকাশ এবং গ্রামের সঙ্গে শহরের বিচ্ছিন্নতার কারণে নবীন চিকিৎসকদের গ্রাম সম্পর্কে ভীতি, পারিবারিক চিকিৎসক হওয়ার পরিবর্তে ওষুধ কোম্পানি ও ক্লিনিক মালিক প্রভাবিত ‘বিশেষজ্ঞ’  হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে তারা অধিক আগ্রহী হন। ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে নির্ধারিত কর্তব্য পালন না করেও ধনী সন্তানরা এমবিবিএস পাসের পর পরই ঢাকায় বড় বড় হাসপাতাল ও বিএসএমএমইউতে অবৈতনিক রেসিডেন্সি করে কয়েকবার পরীক্ষা দিয়ে এফসিপিএস/এমডি/এমএস/এমফিল প্রভৃতি পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিগ্রি অর্জন করে বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন।

সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর ভর্তির চিত্রটাও বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন। কোনো প্রকারে ১০% গ্রামের ছেলেমেয়েরা মেডিকেল কলেজের দ্বার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রায় ৯০ ভাগ সবাই শহরের ধনী উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তের সন্তান এবং ৫০% এর অধিক নারী শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীদের পিতৃপুরুষের গ্রামে বাড়ি আছে বটে, তবে তারা ৫/৭ বছরেও একবার পরিবারের জন্মভূমি পরিদর্শন করে না। তাদের মনে ‘কুসংস্কার আচ্ছন্ন গ্রামের ভীতি’ বাসা বেঁধেছে। এদের অভিভাবকগণ গ্রামকে নিরাপদ মনে করেন না। ইউরোপীয় মানের কমোড পায়খানা না থাকার অজুহাতে পুত্র, কন্যাদের গ্রাম থেকে জ্ঞান অর্জন ও সেবা প্রদানের সরকারি উদ্যোগকে প্রাণপণে প্রতিহত করেন।

মেডিকেল শিক্ষাকে স্বাধীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর উপযোগী করার নিমিত্তে বিগত ১০ বছর ধরে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজে প্রত্যেক অধ্যয়ন বছরে ছাত্রছাত্রীরা কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে গণস্বাস্থ্য উপকেন্দ্রে এক মাস অবস্থান করে স্থানীয় নদ-নদী, পশুপাখি, ঋতুর বিভিন্ন ফল ও সবজি এবং গ্রামের প্রচলিত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, গ্রাম্য চিকিৎসক, দাই ও সামাজিক শ্রেণিবিন্যাসের সঙ্গে পরিচিত হয়। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে ছাত্ররা মুক্তিযুদ্ধের কাহিনি শুনে, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কবর ও সমাধি জেয়ারত করে, সন্ধান নেওয়ার চেষ্টা করে কারা এলাকার রাজাকার ও শান্তি কমিটির সদস্য ছিল। প্রত্যেক দলে ৪-৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকাও এক মাস সার্বক্ষণিকভাবে গ্রামে অবস্থান করেন এবং সন্ধ্যায় ক্লাস করান বিভিন্ন মেডিকেল বিষয়ে। ছাত্ররা কয়েকদিন গণস্বাস্থ্য ক্লিনিকে সহকারী সেবিকা ও টেকনিশিয়ান হিসেবে কাজও শেখে। প্রত্যেক অতি দরিদ্র ও দরিদ্র পরিবারে দুজন শিক্ষার্থী সারা দিন অবস্থান করে তাদের জীবনযাত্রা ও খাদ্য তালিকা লিপিবদ্ধ করে। চতুর্থ ও পঞ্চম বছরের ছাত্ররা প্রেসক্রিপশন অডিট এবং পরিবারের মাসিক স্বাস্থ্য ব্যয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে। গ্রামে অবস্থানকালে অনেকে সাঁতার শিখে নেয়। গ্রামবাসীর সঙ্গে এক বিকালে সংস্কৃতি অনুষ্ঠানে মিলিত হয়। ছাত্রছাত্রীদের গ্রামের নিরাপত্তা সম্পর্কে ভীতি অনেকাংশে কাটে, কিছুটা হলেও দেশপ্রেম জাগ্রত হয়। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশনীতে গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক কলেজের এ শিক্ষা পদ্ধতির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা আছে।

প্রান্তিক জনসাধারণের স্বাস্থ্যসুবিধা সরেজমিনে দেখার জন্য মেডিকেল, নার্সিং, ডেন্টাল ও ফিজিওথেরাপি শিক্ষার্থীদের ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কয়েক সপ্তাহ অবস্থান অতীব প্রয়োজনীয়।

মেডিকেল শিক্ষা কার্যক্রমে কয়েকটি ওষুধ উৎপাদন প্রতিষ্ঠান পরিভ্রমণ করে ওষুধের উৎপাদন ব্যয় ও মান নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে প্রত্যক্ষ জ্ঞানার্জন বাধ্যতামূলক হওয়া প্রয়োজন। যুগের প্রয়োজনে হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদ/ ইউনানী, আকুপাংচার, ফিজিওথেরাপি ও নার্সিং সেবা সম্পর্কে প্রতি বিষয়ে দুই সপ্তাহ অধ্যয়ন উন্নত মানের চিকিৎসক সৃষ্টিতে সহায়ক হবে। চতুর্থ ও পঞ্চম বছরে শিক্ষার্থীদের কয়েক সপ্তাহ ডেন্টিস্ট্রি, আলট্রাসনোগ্রাফি ও ল্যাবরেটরিতে রক্ত, পুঁজ, মেরুরজ্জুর রস (CSF) পায়খানা, প্রস্রাব প্রভৃতি পরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় এবং রক্ত পরিসঞ্চালন (Blood Transfusion) শেখানো হবে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। সামরিক বাহিনীর মেডিকেল কলেজে যারা অধ্যয়ন করবে তাদের ন্যূনতম ৫ বছর সামরিক/পুলিশ বা কারাগারের হাসপাতালে কাজ করা বাধ্যতামূলক করা যৌক্তিক হবে।

লেখক : গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা।

সর্বশেষ খবর