শিরোনাম
শনিবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

শিক্ষাঙ্গনের হত্যাকান্ড

দায়ী বিচারহীনতার সংস্কৃতি

স্বাধীনতার পর দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় এ পর্যন্ত ১৫১ জন খুন হয়েছেন। এসব অপরাধের জন্য কাউকে শাস্তি পেতে হয়নি। খুনের দায়ে আদালতের রায়ে শাস্তি হলেও অপরাধীদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসা এক সামরিক শাসকের ক্ষমা ঘোষণায়। শিক্ষাঙ্গনে যা ইচ্ছা তাই করা যায়, এমনকি খুন করেও শাস্তি এড়ানো যায় এই অপসংস্কৃতির জন্য একের পর এক খুনের ঘটনা ঘটছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয়। সর্বশেষ ঘটনায় প্রাণ দিতে হলো বুয়েট ছাত্র আবরারকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে খুনের সঙ্গে জড়িত প্রায় সবাইকে গ্রেফতার করেছে। বলা হচ্ছে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে চার্জশিট দেওয়া হবে। হত্যাকান্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো প্রতিশ্রুতিই আস্থা সৃষ্টি করতে পারছে না অতীতের ১৫১টি হত্যাকান্ডে কারও শাস্তি না হওয়ায়। সবচেয়ে বেশি খুনের ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই। সেখানে খুন হয়েছেন অন্তত ৭৪ জন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৯, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ২, মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। এসব খুনে কোনো অপরাধীই শাস্তির মুখোমুখি হয়নি আজও। যে কটি মামলার রায় হয়েছে সেসব ক্ষেত্রে বেশির ভাগ আসামি লাপাত্তা। শিক্ষাঙ্গনে খুন-খারাবি বন্ধ করতে চাইলে সবার আগে মূল জায়গায় হাত দিতে হবে। এখন শিক্ষাঙ্গনে যা চলছে তা পথভ্রষ্ট রাজনীতি। আমাদের নেতারা মানুষের সেবা ও সমাজকল্যাণের যে আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করতেন, তারা সেই আদর্শ হারিয়ে ফেলেছে। শিক্ষাঙ্গনে হত্যা ও নির্যাতনের চর্চা বন্ধে আবরার হত্যার আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংগঠনের দুর্বৃত্ত নেতাদের নেতৃত্বে টর্চার রুম খোলার জংলি সংস্কৃতির অবসান শুধু নয়, এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিরজীবনের জন্য বহিষ্কার করতে হবে।

সর্বশেষ খবর