সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

এমন মৃত্যু আর দেখতে চাই না

মহিউদ্দিন খান মোহন

এমন মৃত্যু আর দেখতে চাই না

স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে প্রখ্যাত সাংবাদিক নির্মল সেন ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি’ চেয়ে তার বিখ্যাত কলামটি লিখেছিলেন। তার সে চাওয়া যে আজও পূরণ হয়নি সহপাঠী ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদের নিহত হওয়া থেকেই তা প্রমাণিত। তার এ করুণ মৃত্যু ব্যথিত করেনি এমন মানুষ একজনও পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না। আবরারের মৃত্যুর খবর পড়তে পড়তে অনেককেই অশ্রুসজল হতে দেখেছি।  আবরার ফাহাদ ছিল একজন মেধাবী ছাত্র। স্কুল-কলেজের বিভিন্ন পরীক্ষায় তীক্ষ মেধার স্বাক্ষর রেখেই সে এসে ভর্তি হয়েছিল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার বাবা-মা তাকে অনেক স্বপ্ন নিয়ে পাঠিয়েছিলেন উচ্চশিক্ষা অজর্নের জন্য। ছেলে একদিন বড় ইঞ্জিনিয়ার হবে, তাদের মুখ উজ্জ্বল করবে, দেশজোড়া নাম করবে- এমন অনেক স্বপ্নই হয়তো তাদের ছিল। একটি রাতের ঝড়ে তাদের সব স্বপ্ন ধুলায় মিশে গেছে। এক অন্ধ আক্রোশে তারই সহপাঠীরা তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলল! যারা তাকে মেরেছে তারাও সবাই মেধাবী এটা অস্বীকার করা যাবে না। কিন্তু সে মেধাবী ছেলেগুলো কী করে অমন হিংস্র হয়ে উঠেছিল? দৃশ্যটি কল্পনা করলে গা শিউরে ওঠে। পুলিশ হেফাজতে আবরারের খুনিদের বর্ণনায় সে রাতের ভয়ঙ্কর চিত্র গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। শেরেবাংলা হলের টর্চার সেল হিসেবে চিহ্নিত কক্ষটিতে তারই সহপাঠীরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে; অনেকটা পিটিয়ে সাপ মারার মতো। খবরে বলা হয়েছে, অনিক নামে ছাত্রলীগের এক নেতা একাই নাকি আবরারকে দেড়শত আঘাত করেছে। ভাবা যায়! সকাল-বিকাল যার সঙ্গে তাদের দেখা হতো, কথা হতো, গল্পগুজব হতো, তাকেই ওরা পিটিয়ে মেরে ফেলল! কেন এ নিষ্ঠুর জিঘাংসা ওদের মনে বাসা বেঁধেছিল? আবরারের সঙ্গে তো ওদের কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা ছিল না। সে কোনো রাজনৈতিক দল বা মতের সমর্থকও ছিল না। তাহলে কেন তাকে এমন করুণ পরিণতি বরণ করতে হলো?

আবরার কেন ছাত্রলীগ নেতাদের কোপানলে পড়েছিল তা এখন সবার জানা; তাই তার পুনরুল্লেখ নিষ্প্রয়োজন মনে করছি। তারা তাকে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মী বলে সন্দেহ করেই ‘শাস্তি’ দিয়েছে। অথচ আবরারের বাবা এবং পুরো পরিবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। গ্রেফতার ছাত্রলীগ নেতা ইফতি মোশাররফ সকাল তার স্বীকারোক্তিতে বলেছে, আবরারকে শায়েস্তা করার নির্দেশ দিয়েছিল বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন। ছুটি কাটিয়ে ৬ অক্টোবর বাড়ি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ফিরেছিল আবরার। ওই রাতেই তার ডাক পড়ে হলের ২০১১ নম্বর রুমে; যেটাকে টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার করত ছাত্রলীগ নেতারা। তারপর সৃষ্টি হয় এক করুণ ইতিহাস, যা দেশের মানুষকে বেদনায় মুষড়ে দিয়েছে।

একজন আবরারের হত্যার মধ্য দিয়ে এ সত্যটি সবার কাছে স্পষ্ট হয়েছে যে, দেশের বর্তমান অসহিষ্ণু রাজনীতির নির্মম শিকার সে। রাজনৈতিক আশ্রয়-প্রশ্রয়ে অমিত সাহা, রাসেল, রবিন, সকাল, অনিকরা মেধাবী ছাত্রের সুনাম ঘুচিয়ে পরিণত হয়েছে একেকজন দোর্দ- প্রতাপশালী মাসলম্যানে। তাদের ভিতরে এ ধারণা জন্মেছিল যে, ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের হাত তাদের মাথার ওপরে আছে। সুতরাং তারা যা খুশি করতে পারে, কেউ তাদের কিছু করতে পারবে না। এ ধারণাই তাদের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি করে টর্চার সেল তৈরিতে সাহসী করেছে। গত ১১ অক্টোবরের বাংলাদেশ প্রতিদিনে ‘গেস্টরুমের অপর নাম টর্চার সেল’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এর আদ্যোপান্ত তুলে ধরা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতিটি ছাত্রহলে এ কালচার চালু রয়েছে। যে গেস্টরুম অতিথিদের জন্য নির্দিষ্ট, সেখানে ছাত্রলীগ নেতারা ভিন্ন মতাবলম্বী ছাত্রদের ধরে এনে শায়েস্তা করে। ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা ওইসব টর্চার সেল সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে আতঙ্ক। একই দিন অপর একটি দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুয়েটের শেরেবাংলা হলের অপর এক ছাত্র দাইয়ান নাফিস প্রধানও আবরারের মতো নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। বছরখানেক আগে তাকেও শিবির আখ্যা দিয়ে ওই টর্চার সেলেই বেধড়ক মারধর করেছিল ছাত্রলীগ কর্মীরা। তবে সে প্রাণে বেঁচে গেছে। শিবির অপবাদ দিয়ে তাকে তুলে দেওয়া হয়েছিল পুলিশের হাতে। তার অপরাধ ছিল কোটা আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের সমর্থনে ফেসবুকে মন্তব্য করা। সবচেয়ে দুঃখজনক হলো, এই একটি ঘটনায় একসঙ্গে ২০ জন মেধাবীর জীবন ধ্বংস হয়ে গেল। আবরার ফাহাদ খুন হলো আর সে খুনের আসামি হলো আরও ১৯ জন মেধাবী তরুণ। এটা যে আমাদের জাতীয় ক্ষতি তা কি অস্বীকার করা যাবে? এই ২০ জনের প্রত্যেকেই দরিদ্র বা মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসা। তাদের অভিভাবকরা অনেক আশা, অনেক স্বপ্ন নিয়ে তাদের পাঠিয়েছিলেন বিদ্যার্জনের জন্য। অথচ সে আশা, সে স্বপ্ন এখন ভেঙে খান খান। গত ১২ অক্টোবরের বাংলাদেশ প্রতিদিনের ‘মেধাবী থেকে ওরা খুনি’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি পাঠ করলে যে কারও কষ্টে বুকটা মোচড়ে উঠবে। একেকজন পিতা কত আশা নিয়ে তার সন্তানকে পাঠান উচ্চশিক্ষার জন্য। কিন্তু অপরাজনীতির কবলে পড়ে তাদের কেউ কেউ খুনি হয়ে যায় জেলখানায়, আর কেউ বাড়ি ফেরে লাশ হয়ে।

শুধু বুয়েট নয়, খেয়াল করলে দেখা যাবে প্রায় প্রতিটি উচ্চ শিক্ষালয়ে একই পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ছাত্ররাজনীতির নামে মেধাবী তরুণদের পরিণত করা হচ্ছে সশস্ত্র ক্যাডারে। তাদের প্ররোচিত করা হচ্ছে সহজ পথে অর্থ-বিত্ত কামাইয়ে প্রবৃত্ত হতে। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজির হাতিয়ার হিসেবে এদের ব্যবহার করছে একটি গ্রুপ; যারা রাজনৈতিক নেতা নামে পরিচিত। তারা আবার এসব কর্মী-ক্যাডারের কাছে ‘বড়ভাই’ হিসেবে পরিচিত। ওইসব বড়ভাইয়ের হুকুম তামিলে এরা বিন্দুমাত্র দ্বিধা করে না। কখনো গলায় ছুরি বসিয়ে দেয় কোনো নিরপরাধ ব্যক্তির, কখনো আগ্নেয়াস্ত্রের বুলেটে ঝাঁজরা করে দেয় কারও বুক, আবার কখনো সহপাঠীকে করে পিটিয়ে হত্যা। বলতে বা স্বীকার করতে দ্বিধা থাকার কথা নয় যে, আমাদের রাজনীতির পর্দার আড়ালের একশ্রেণির ‘কালো মানুষ’ এদের বিপথগামী করছে। আর এ রাজনীতিকেই ‘নষ্ট রাজনীতি’ বলে অভিহিত করেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। গত ৯ অক্টোবর একটি দৈনিকে ‘দায় কে নেবে’ শিরোনামে প্রকাশিত তাৎক্ষণিক নিবন্ধে তিনি বলেছেন, ‘এই যে নষ্ট রাজনীতির কারণে যুব সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এমন ভয়ানক এবং ঘৃণ্য অপরাধ প্রবণতায় জড়িয়ে পড়ছে এবং ভয়ঙ্করভাবে এর বিস্তৃতি ঘটেই চলেছে এর দায় কে নেবে?’ সরকারের চলমান শুদ্ধি অভিযানে গ্রেফতারদের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেছেন, ‘এসব অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত যাদের নাম, তারা সবাই কিন্তু দাবি করেন তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। আবরার হত্যাকান্ডের পর প্রশ্ন জাগে বঙ্গবন্ধুর কোন আদর্শের পরিচয় রাখছে অপরাধীরা জাতির কাছে?’ সুলতানা কামালের প্রশ্নের যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই। জুলিওকুরি শান্তিপদকে ভূষিত মানবতাবাদী নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কেমন আদর্শের সৈনিক এরা? দুর্নীতি, সন্ত্রাস, পিটিয়ে বা গুলি করে মানুষ হত্যা কি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ হতে পারে? কতটুকু পাঠ করেছে এরা বঙ্গবন্ধুকে? করেনি, মোটেই করেনি। বলা যায়, তাদের সে পাঠ দেওয়া হয়নি। আর সে জন্যই তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে সরে গেছে যোজন যোজন দূরে। মুখে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের স্লোগান, আর কাজকর্মে একেবারে বিপরীত মেরুতে অবস্থান।

গত ১১ অক্টোবর বাংলাদেশ প্রতিদিনসহ বিভিন্ন দৈনিকে প্রকাশিত ‘দানবের জন্ম’ শীর্ষক বিশেষ নিবন্ধে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও লেখক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল মন্তব্য করেছেন, ‘হত্যাকান্ড শেষ করে তারা খেতে গিয়েছে, খেলা দেখেছে; মৃতদেহটি প্রকাশ্যে ফেলে রেখেছে। অপরাধীরা শাস্তির ভয়ে পালিয়ে যায়, আবরারের হত্যাকারীরা নিজেদের অপরাধী মনে করে না। সরকারের সমালোচনা করার জন্য তারা একজন ছাত্রকে শিবির সমর্থক হিসেবে ‘যথোপযুক্ত’ শাস্তি দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলটি তাদের জন্য অনেক নিরাপদ জায়গা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তাদের দেখেশুনে রাখে, তাদের নিরাপত্তা দেয়। কেউ যেন মনে না করে এটি শুধু বুয়েটের চিত্র; এটি আসলে সারা দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্রÑ কোথাও বেশি, কোথাও কম।’ অধ্যাপক জাফর ইকবালের মন্তব্য থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় কীভাবে মেধাবী মুখগুলো খুনির পরিচয় ধারণ করেছে। দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিদ্যমান পরিবেশ-পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন দেশের বিশিষ্টজনরাও। জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানসহ ১১ জন বিশিষ্ট নাগরিক গত ১০ অক্টোবর পত্রিকায় প্রকাশিত এক যুক্ত বিবৃতিতে তাদের সে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কথা জানিয়েছেন। লক্ষণীয়, ওই বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী সবাই বর্তমান সরকারের সমর্থক হিসেবে পরিচিত। তাদের এ উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কারণটি কী সেটা তাই ব্যাখ্যা করে বলার দরকার পড়ে না। উল্লেখ্য, আবরার হত্যাকান্ডে ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। ৯ অক্টোবরের পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, আগের দিন গণভবনে আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে তিনি তার সে ক্ষোভের কথা বলেছেন এবং সে সঙ্গে এটাও বলেছেন এ হত্যাকান্ডের যথাযথ বিচারের ব্যবস্থা একজন মা হিসেবে তিনি করবেন। এর পরদিন গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী আবরার হত্যার বিচারের ব্যাপারে তার কঠোর অবস্থানের কথা পুনরায় উল্লেখ করেছেন। বলেছেন, ‘কীসের ছাত্রলীগ, ছাত্রদল? অপরাধী কোন দলের তা বিবেচনায় আনা হবে না। এই হত্যাকান্ডের বিচার হবেই।’ প্রধানমন্ত্রীর কঠোর অবস্থান আবরার হত্যার বিচারের বিষয়ে জনমনে আশাবাদ সৃষ্টি করেছে। তাদের বিশ্বাস, এ বর্বরোচিত হত্যার বিচার অবশ্যই হবে। অপরাধীরা শাস্তি পাবে। কিন্তু বুকের ভিতরে বেদনার যে কাঁটা আবরারের পরিবার এবং দেশবাসীর মনে প্রতিনিয়ত আঘাত করবে তা কী কখনো প্রশমিত হবে?

মৃত্যু মানুষের অবধারিত পরিণতি। তবে সে মৃত্যু হতে হবে স্বাভাবিক। সবচেয়ে বেদনাদায়ক মৃত্যু হলো অস্বাভাবিক মৃত্যু। কথাসাহিত্যিক শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তার দেবদাস উপন্যাসের যবনিকা টেনেছেন এভাবে- ‘তোমরা যাহারা এ কাহিনী পড়িবে, হয়তো আমারই মতো কষ্ট পাইবে। যদি কখনো দেবদাসের মতো হতভাগ্য, অসংযমী-পাপিষ্ঠের সহিত পরিচয় ঘটে, তাহার জন্য একটু প্রার্থনা করিও। প্রার্থনা করিও, আর যাহাই হউক, যেন এমন করিয়া কাহারো মৃত্যু না ঘটে। মরণে ক্ষতি নাই, কিন্তু সে সময়ে যেন একটি স্নেহকরস্পর্শ তাহার ললাটে পৌঁছে- যেন একটিও করুণার্দ্র স্নেহময় মুখ দেখিতে দেখিতে এ জীবনের অন্ত হয়। মরিবার সময় যেন কাহারো একফোঁটা চোখের জল সে দেখিয়া মরিতে পারে।’ আফসোস, আমাদের আবরার অসংযমী ছিল না, ছিল না পাপিষ্ঠও। সে ছিল একজন আত্মপ্রত্যয়ী মেধাবী তরুণ। অথচ বিনাদোষে তাকে প্রাণ হারাতে হলো তারই কতিপয় অসংযমী-পাপিষ্ঠ সহপাঠীর হাতে। তার এ করুণ মৃত্যু আমাদের চিত্তকে বেদনায় বিদীর্ণ করে দিয়েছে। তার মৃত্যুর সময় কোনো স্নেহকর তার ললাট স্পর্শ করেনি; বরং সহপাঠীদের লাঠির আঘাতে সে হয়েছে জর্জরিত। কোনো করুণার্দ্র স্নেহময় মুখ দেখার ভাগ্যও তার হয়নি, বরং সহপাঠীদের হিংস্র রূপ দেখতে দেখতেই সে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে। তবে তার মৃত্যুর পর সবাই কেঁদেছে। তার বাবা-মা স্বজনদের সঙ্গে কেঁদেছে সারা দেশ। কিন্তু লাখো চোখের সে জল দেখে যেতে পারেনি আবরার। নিষ্ঠুর এক মৃত্যু তাকে এ পৃথিবী থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেল। আর তাই আজ চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে- এমন মৃত্যু আমরা আর দেখতে চাই না।  এ অশুভ প্রবণতার অবসান ঘটুক।

                লেখক : সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক।

সর্বশেষ খবর