শিরোনাম
সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা
ইতিহাস

মার্কাস অরিলিয়াস

রোমান যুগে সম্রাটগণ বিশাল আকৃতির এরেনাতে (স্টেডিয়াম) গ্লাডিয়েটরদের (বন্দী দাস যোদ্ধা) দুর্ধর্ষ সব লড়াইয়ের আয়োজন করতেন। মার্কাস অরিলিয়াস নামে একজন প্রজাবৎসল, দয়ালু ও দার্শনিক সম্রাট ছিলেন। সমগ্র রোমান ইতিহাসে যে দু-চারজন ভালো ও দয়ালু সম্রাট ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন এই মার্কাস অরিলিয়াস। তো সেই সুযোগ্য সম্রাটের একটি অপদার্থ পুত্র ছিল, নাম-কমোডাস (১৬১ খ্রিস্টাব্দ-১৯২ খ্রিস্টাব্দ)। পিতা যেমন ছিলেন সুশাসক, প্রজাবৎসল ও দয়ালু, পুত্র একেবারে ঠিক তার উল্টো। ফলে কমোডাসের রাজত্বে দেখা দিয়েছিল দুর্ভিক্ষ, দুঃশাসন, মহামারী প্রভৃতি উপসর্গ। রোম সাম্রাজ্যের অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে গ্লাডিয়েটরের লড়াইও যথেষ্ট ছিল না যে প্রজাদের দৃষ্টি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া যায়। তো কী করা যায় এসব সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতে স্বয়ং সম্রাট কমোডাস নিজেই তলোয়ার হাতে নেমে পড়লেন সেই এরেনায় গ্লাডিয়েটরদের সঙ্গে লড়াই করতে। দুঃখ-কষ্ট, পেটে ক্ষুধা, দুঃশাসন এসব ভুলে, পেটে পাথর চেপে দলে দলে প্রজারা ছুটলেন সম্রাটের তলোয়ার চালনা দেখতে। কী আশ্চর্য! অমিত শক্তিশালী কোনো যোদ্ধাই এঁটে উঠছে না সম্রাটের সঙ্গে। সিরিয়া, বাগদাদ, গল (ফ্রান্স) আফ্রিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে বন্দী দাস হিসেবে নিয়ে আসা বাঘা বাঘা যোদ্ধা একে একে সব মৃত্যুমুখে ঢলে পড়ছে সম্রাটের তলোয়ারের সামনে। প্রজারা সব বিস্ময়াবিভূত চিত্তে ভাবতে লাগলেন তাদের সম্রাট যে এতটা বীর পুরুষ সেটা তারা কস্মিনকালেও কল্পনা করতে পারেননি। কিন্তু এভাবে প্রজাদের আর কতদিন বুদ্ধু বানিয়ে রাখা যায়।

অবশেষে একদিন বেরিয়ে এলো সম্রাটের জোচ্চুরির কাহিনি। সম্রাটের লোকজন নাকি কৌশলে লড়াইয়ের আগেই খাবারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে বশীভূত করে রাখত সেই যোদ্ধাদের। তারপর লড়াই চলাকালীন একটা সময় যখন বিষক্রিয়া শুরু হতো তখন সুযোগে সম্রাট কমোডাস তলোয়ারের আঘাতে  মণ্ডুপাত করতেন সেসব যোদ্ধার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর