সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম

সরকারকে সচেতন হতে হবে

দেশের ব্যাংকগুলোর মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতেও চলছে অনিয়ম আর যথেচ্ছতার মচ্ছব। কোনো কোনো ব্যাংক পরিচালকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালকরা জনগণের আমানতের টাকা লুটপাট কর্তব্য বলে বেছে নিয়েছেন। তাদের এই কুকর্মের কারণে বেশির ভাগ আর্থিক প্রতিষ্ঠানে লালবাতি জ্বলে ওঠা অনিবার্য হয়ে উঠেছে। উল্লেখ্য, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বাইরে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ, নতুন প্রকল্প স্থাপনে অংশগ্রহণ, ইক্যুইটি ফিন্যান্স, লিজ ফিন্যান্স এবং পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের লক্ষ্যে দেশে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে লাইসেন্স দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব প্রতিষ্ঠান সঞ্চয়ী আমানত গ্রহণ করতে পারে না। জনগণের কাছ থেকে এরা শুধু দীর্ঘমেয়াদি আমানত বা স্থায়ী আমানত সংগ্রহ করতে পারে। আর এ সুযোগে উচ্চসুদে আমানত সংগ্রহ করে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগে ঋণ বা লিজ না দিয়ে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানের পরিচালকরা নামে-বেনামে নিজেরাই ঋণ নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শনে দেখা গেছে, এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালকরা নামে-বেনামে প্রতিষ্ঠানের ৬০ থেকে ৮০ ভাগ পর্যন্ত ঋণ নিজেরাই গ্রহণ করেছেন। অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে চরম সংকটে পড়া পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ প্রতিষ্ঠানে আমানতকারীদের জমানো ২ হাজার ৮৬ কোটি টাকা কীভাবে ফেরত দেওয়া যায় সে বিষয়ে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। পরিচালকদের লুটেরা মনোভাবের কারণে বেশির ভাগ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবস্থা প্রায় অভিন্ন। ব্যাংকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের আমানত করা অর্থের সুরক্ষায় সরকার আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে। আমানত সুরক্ষা আইন-২০১৮-এর মাধ্যমে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের আমানতের বিপরীতে বীমা করা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। দৃশ্যত এ পদক্ষেপে মনে হচ্ছে সরকার আমানতকারীদের স্বার্থের ব্যাপারে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে চাচ্ছে। কিন্তু পরিচালকরা আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ‘এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই’ মনোভাবে ব্যবহার করতে চাইলে আইনের সংস্কারেও আদৌ সুফল আসবে বলে মনে হয় না। এ ব্যাপারে সরকারকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে।  এটি তাদের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

সর্বশেষ খবর