শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

হাওরদূষণ বন্ধ হোক

পরিবেশবান্ধব পর্যটন গড়ে উঠুক

দেশের হাওর এলাকাগুলো পরিণত হতে পারে পর্যটনের স্বর্গভূমিতে। কিন্তু দেশি পর্যটকদের অসচেতনতায় দূষণের শিকার হচ্ছে হাওর। বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেশের বিভিন্ন হাওরের  বেহাল চিত্র তথা দূষণের যে তথ্য পরিবেশিত হয়েছে তা উদ্বেগজনক। বিশেষ করে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের যেখানে সেখানে পর্যটকদের পলিথিন, প্লাস্টিকের বোতল ও আবর্জনা ফেলা উদ্বেগজনক। এতে বলা হয়, পরিবেশগত দিক থেকে সংকটাপন্ন অবস্থায় থাকা সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর দিন দিন আরও বিপন্ন হচ্ছে। পর্যটন বিকাশের নামে পরিবেশের প্রতি খেয়াল রেখে এখানে ইকো-ট্যুরিজম বিকাশের কথা থাকলেও ভ্রমণের নামে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক হাওরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যথেচ্ছভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপার লীলাভূমি টাঙ্গুয়ার হাওর। ‘ছয় কুড়ি বিল, নয় কুড়ি কান্দা’ নিয়ে গঠিত টাঙ্গুয়ার হাওরের অবস্থান সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী তাহিরপুর ও ধর্মপাশা উপজেলায়। কান্দাভর্তি সারি সারি হিজল, করচ আর নলখাগড়ার বন। হাওরভর্তি মাছ, জলচর পাখি। প্রায় ১০০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ জলাধারটির প্রধান আকর্ষণ জীববৈচিত্র্য। ৪টি ইউনিয়নের ১৮টি মৌজাজুড়ে এর আয়তন ১২ হাজার ৬৫৫ হেক্টর। এ এলাকার ৮৮টি গ্রামের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ হাওরের ওপর নির্ভরশীল। এ হাওরে প্রতি বছর আসে হাজারো পরিযায়ী পাখি। পাখির কলকাকলিতে মেতে ওঠে হাওরের আকাশ-বাতাস। সুউচ্চ মেঘালয় পাহাড়ঘেঁষা দৃষ্টিনন্দন এ জলাভূমিতে রয়েছে ২৫০ প্রজাতির পাখি, ১৪০ প্রজাতির মাছ, ১২ প্রজাতির ব্যাঙ, ১৫০ প্রজাতির সরীসৃপ এবং হাজারের বেশি প্রজাতির অমেরুদ-ী প্রাণী। প্রতি বছর শীতকালে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে ৫১ প্রজাতির পরিযায়ী পাখি আসে এ হাওরে। বাংলাদেশের সুবিস্তৃত জলাভূমি বিশেষ করে হাওর এলাকাকে কেন্দ্র করে পর্যটন সুযোগ-সুবিধা গড়ে উঠলে তা লাখ লাখ বিদেশি পর্যটক আকর্ষণের ক্ষেত্রে অবদান রাখবে। দেশের পর্যটন আয়ও বহুগুণ বেড়ে যাবে। একই সঙ্গে হাওরের পরিবেশ সংরক্ষণ জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় আশীর্বাদ হয়ে দেখা দেবে। এ বিষয়ে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও এগিয়ে আসতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর