বুধবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

মানবতার মুক্তিদূত রসুল মুহাম্মদ (সা.)

মুহম্মাদ ওমর ফারুক

মানবতার মুক্তিদূত রসুল মুহাম্মদ (সা.)

মানবতার মুক্তিদূত রসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন রাহমাতুল্লিল আলামিন বা সমগ্র বিশ্বের জন্য রহমতস্বরূপ। মহান আল্লাহর যত সৃষ্টি আছে তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ, সবচেয়ে মর্যাদামন্ডিত সৃষ্টি হলেন তার পিয়ারে হাবিব হজরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা.)। রবিউল আউয়াল মাসের সোমবার সুবহে সাদিকের সময় মক্কা নগরীতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি এসেছেন রাহমাতুল্লিল আলামিন হিসেবে। সমাজ থেকে শিরক-বিদআতসহ সব ধরনের অপকর্ম দূর করে একটি শান্তিময় সমাজ গঠন করেছিলেন তিনি। রসুল (সা.) জনসমক্ষে দুর্নীতির ভয়াবহ কুফল তুলে ধরে তা থেকে উম্মতদের দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। সুনীতি চর্চার সুফল ও কল্যাণ হাতেকলমে শিক্ষা দিয়েছেন।

উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুল (সা.) বলেছেন, ‘একদিন ফেরেশতা জিবরাইল (আ.) এসে বললেন, হে মুহাম্মদ! পূর্ব থেকে পশ্চিম, সমগ্র ভূখ- আমি তন্ন তন্ন করে খুঁজেছি কিন্তু আপনার মতো মর্যাদাসম্পন্ন আর কাউকে পাইনি। আপনার সম্মানে আপনার বংশ হাশিমকে এত মর্যাদা দেওয়া হয়েছে যে, হাশিম বংশের পিতার চেয়ে কোনো মর্যাদাম-িত পিতা আমি পৃথিবীর বুকে পাইনি’ (মাদারিজুন নবুয়াত)।

মানুষের কর্মের উৎস তার অন্তকরণ বা কলব। স্বচ্ছ ও নির্মল অন্তঃকরণ নীতি-নৈতিকতার আদর্শ ধারণে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে। তাই রসুল (সা.) সর্বপ্রথম মানুষের অন্তঃকরণ স্বচ্ছ, নির্মল ও পরিশুদ্ধ করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘মানবদেহে রয়েছে একটি মাংসপি-, সেটি সুস্থ থাকলে পুরো দেহ সুস্থ থাকে আর সেটি বিনষ্ট হলে পূর্ণ দেহ বিনষ্ট। সেটি হলো কালব বা অন্তঃকরণ। মহান আল্লাহর বাণী, ‘সফলকাম হয়েছে সেই ব্যক্তি যে তার অন্তরকে শুদ্ধ করেছে এবং ব্যর্থ হয়েছে সে, যে সেটা অকার্যকর রেখেছে।’ (আল কোরআন-৯১:৯-১০)। মহান আল্লাহ আরও বলেন, ‘ওই ব্যক্তি সফলকাম হয়েছে যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করেছে’। (আল কোরআন-৮৭:১৪)।

আল্লাহকে পেতে হলে রসুল (সা.) এর পথে যুক্ত হতে হবে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মুহাম্মদ! আপনি বলুন, (দুনিয়ার মানুষ) তোমরা যদি আল্লাহকে ভালোবাস তবে আমি নবীকে অনুসরণ করে চল। তাহলে আল্লাহও তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গুনাহগুলো মাফ করে দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাকারী ও পরম দয়াময়’ (সূরা আল ইমরান : ৩১)। এভাবে তিনি মানুষের হৃদয়-মনকে পরিশুদ্ধ করার মাধ্যমে একে সৎকর্ম ও সদুপদেশ গ্রহণের উপযুক্ত পাত্র হিসেবে গ্রহণ করার জন্য উৎসাহিত করেন, যাতে কোনোরূপ নীতিবিরুদ্ধ কাজ অন্তরে প্রশ্রয় পেতে না পারে। সুন্দর জীবন গঠনের মাধ্যমে ইহ-পরকালের কল্যাণ নিশ্চিত হয়। রসুল (সা.) মহান আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণী প্রচার করেছেন- ‘মুমিন পুরুষ কিংবা নারী যে কেউ সৎকর্ম করবে আমি তাকে নিশ্চয়ই পবিত্র জীবন দেব এবং তাদেরকে তাদের কর্মের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব।’ (আল কোরআন-১৬:৯৭)। এভাবে অসংখ্য আয়াত ও হাদিসের মাধ্যমে তিনি সুনীতি ও সৎকর্মে উৎসাহিত করেছেন।

সর্বশেষ খবর