বুধবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ওষুধের দামে যথেচ্ছতা

এই নোংরা বাণিজ্য বন্ধ হোক

ওষুধবাণিজ্য জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ওষুধ কোম্পানিগুলো চিকিৎসকদের উৎকোচ দেওয়ার জন্য ওষুধের দাম গড়ে ২৫ ভাগ বেশি রাখে এমন রটা প্রায় সবারই জানা। নজরানা না দিলে সিংহভাগ চিকিৎসক কোনো ওষুধ কোম্পানির ওষুধ প্রেসক্রিপশনে লেখে না এটি একটি ওপেন সিক্রেট। মফস্বলের হাতুড়ে চিকিৎসকদের বদৌলতে মানহীন ওষুধ কোম্পানিগুলো টিকে আছে এমন অভিযোগ বোদ্ধাজনদের। ওষুদের নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি অর্থ আদায় করা অনেক হাসপাতাল ও ক্লিনিকের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। ২০০৮ সালে অপরিহার্য ওষুধের ক্যাটাগরিতে সরকার যে ১১৭টি ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করে সেই ওষুধগুলোর মূল্যেরই কোনো ঠিক নেই। একেক কোম্পানি একেক দাম রাখছে। আগের মতোই বিভিন্ন অজুহাতে যেমন খুশি মূল্য রাখছে ফার্মেসিগুলো। রাজধানীর পদ্মা জেনারেল হাসপাতালে গত ২৪ এপ্রিল অপারেশনের এক রোগীর কাছে দুই বক্স ফেডরিন ইনজেকশন বিক্রি করা হয়েছে ৮০০ টাকায়। অথচ পপুলার ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেড কোম্পানির এই ইনজেকশনের প্যাকেটের গায়ে প্রতিটির দাম লেখা রয়েছে ২৫ টাকা। ১০টির বক্সের দাম ২৫০ টাকা। আর দুই প্যাকেটের দাম ৫০০ টাকার বদলে ৮০০ টাকা রাখা হয়। ওই হাসপাতালেই ২৭ এপ্রিল একই ইনজেকশন ফারুক হাওলাদার নামে আরেক রোগীর স্বজনদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে ৪১৫ টাকা করে। তাদের কাছে দুই বক্স ইনজেকশন বিক্রি করা হয় ৮৩০ টাকায়। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের অভিযানে বেরিয়ে এসেছে ওষুধের দাম নিয়ে প্রতারণার এ চিত্র। ওষুধবাণিজ্য কতটা অমানবিক হয়ে উঠেছে তার প্রমাণ পাওয়া যায় ক্যান্সারের ওষুধ নিয়েও যেমন ইচ্ছা তেমন বাণিজ্যের ঘটনায়। দেশে প্রস্তুত ক্যান্সারের যেসব ওষুধ বাজারজাত হয়, বিদেশ থেকে একই মানের আমদানিকৃত ওষুধ বিক্রি হচ্ছে দিগুণ দামে। ওষুধ বাণিজ্যের প্রতি স্তরে যে নৈরাজ্য চলছে তা বন্ধে চিকিৎসকদের উৎকোচ প্রদানের জঘন্য কৌশল বন্ধ করতে হবে। নকল ভেজাল ও মানহীন ওষুধের বিরুদ্ধে নিতে হবে কঠোর ব্যবস্থা। ওষুধের বাজারের ওপর সরকারের নজরদারি বাড়ানোও জরুরি। ফার্মেসিগুলোতে ওষুধের দাম টাঙানো থাকলে ক্রেতাদের পক্ষে যাচাই করা সহজ হবে। ওষুধ ব্যবসায়ীদের পক্ষে ক্রেতাদের ঠকানোর পথ তাতে রুদ্ধ হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর