রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

সড়কশৃঙ্খলা

সবার দায়িত্বশীল ভূমিকা কাম্য

সড়ক নৈরাজ্যের অবসানে নতুন আইন করা হলেও তা কতটা কাজে আসবে এ নিয়ে ইতিমধ্যে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় পরিবহন চালক, যাত্রী, পথচারী সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। আইনের প্রতি সব পক্ষকে শ্রদ্ধাশীল হওয়ার কঠিন কাজটি করতে হবে ট্রাফিক পুলিশকে। তারা রাষ্ট্রীয় আইন সুরক্ষার বদলে পরিবহন মালিক ও চালকদের কাছ থেকে পকেট ভরার আশা করলে সকলি গরলি ভেলে পরিণত হবে। আগের চেয়ে অনেক গুণ বেশি জরিমানা ও শাস্তির বিধান রেখে প্রবর্তিত নতুন সড়ক পরিবহন আইনটি বাস্তবায়ন করা গেলে রাজপথের নৈরাজ্যের অবসান ঘটবে, চলাচলে স্বচ্ছন্দ ফিরে আসবে। মানুষের ভোগান্তি এবং সড়ক দুর্ঘটনার পরিমাণও কমে আসবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যানজটকবলিত রাজধানী ঢাকায় দিল্লির মতো একদিন জোড় অন্যদিন বিজোড় সংখ্যার গাড়ি চলাচলের বিধি আরোপ করলে মহানগরীতে প্রাইভেট কারের আধিক্য কমে যানজট পরিস্থিতির উন্নতি হবে। শিক্ষাঙ্গন-অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় স্কুলের শুরু ও ছুটির সময় প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ করলে সুফল পাওয়া যাবে। শহরজুড়ে হাজার হাজার আন্তজেলা বাস কাউন্টার বন্ধ করে দিতে হবে। এসব বাস কাউন্টারে দিনভর দূরপাল্লার বাসগুলো থেমে থেমে যাত্রী ওঠানো-নামানো করায় যানজটের সৃষ্টি হয়। একসময় দূরপাল্লার বাস দিনের বেলায় রাজধানীতে ঢুকতে পারত না। তারা মিনিবাসে করে যাত্রী নিয়ে টার্মিনালে দূরপাল্লার বাসে পৌঁছে দিত। এখন রাজধানীজুড়েই বাসের স্টপেজ গড়ে উঠেছে, যা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সাধারণ যাত্রী ও পথচারীকে মোটিভেশনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। সড়ক নৈরাজ্যের অবসান ঘটাতে হলে প্রভাবশালীদের হামবড়া আচরণের অবসান ঘটাতে হবে। কেউ যাতে সড়ক আইন ভাঙতে না পারে সে ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হতে হবে। সড়ক নৈরাজ্যের জন্য ঢালাওভাবে পরিবহন চালকদের দায়ী করা হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে পথচারীদের দায় মোটেও কম নয়। ফুটওভার ব্রিজ থাকা সত্ত্বেও বেপরোয়াভাবে সড়ক পার হয় এমন লোকের সংখ্যা কম নয়। কানে মোবাইল ফোন নিয়ে সড়ক পারাপারের দৃশ্য অহরহ চোখে পড়ে। দুর্ঘটনা হলেই আইন হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা মজ্জাগত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে কারণে দুর্ঘটনা হলে চালকদের মধ্যে পালিয়ে আত্মরক্ষার প্রবণতা দেখা যায়। সড়কশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর