বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

ফসলের ক্ষয়ক্ষতি

কৃষি পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিন

ঘূর্ণিঝড় বুলবুল দেশের উপকূলভাগের জেলাগুলোতে ব্যাপক ফসলহানি ঘটিয়েছে। কৃষিমন্ত্রীর মতে ঘূর্ণিঝড়ে ৭২ হাজার ২১২ টন ফসলের ক্ষয়ক্ষতি ঘটেছে, যার আর্থিক মূল্য ২৬৩ কোটি পাঁচ লাখ টাকা। অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বুলবুলের তান্ডবে। ফসলের ক্ষয়ক্ষতিও ব্যাপক। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, ঘূর্ণিঝড়ে শুধু খুলনা জেলায় ২৫ হাজার হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় এক হাজার ৯২ হেক্টর জমির শীতকালীন সবজি ও ভেসে গেছে কয়েক হাজার মাছের ঘের। এ ছাড়া দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৬ জেলার রোপা আমনের ফসল বিনষ্ট হয়েছে দুই লাখ ৮৯ হাজার হেক্টর জমির। এতে আমন চাষিরা অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। বুলবুলের প্রভাবে বরগুনার ছয়টি উপজেলায় চলতি আমন ফসল ও শীতকালীন শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় গাছ উপড়ে পড়াসহ বুলবুলের প্রভাবে পানিতে তলিয়ে গেছে চর ও নিম্নাঞ্চলের ফসলি জমি। সাতক্ষীরার উপকূলীয় উপজেলা আশাশুনি ও শ্যামনগরে ১৩ হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত ও ৩৩ হাজার ৪৬০টি কাঁচা ঘরবাড়ি আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে এবং ১৬ হাজার ২০০ হেক্টর ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড়ে ভেসে গেছে চিংড়িসহ সাত হাজার ২৩৪টি মৎস্য খামার। মাছচাষিদের দুই কোটি ৯৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। শরীয়তপুর, বরিশাল, নোয়াখালী জেলায়ও বুলবুলের তা-বে ব্যাপক ফসলহানি ঘটেছে। পূর্বপ্রস্তুতির জন্য প্রাণহানি অনেকাংশে এড়ানো সম্ভব হলেও ফসলহানি এড়ানো সম্ভব হয়নি। তবে বাংলাদেশ ভূখন্ডে প্রবেশের সময় সুন্দরবনে বাধাপ্রাপ্ত না হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পেত। বুলবুলের কারণে কৃষির যে ক্ষয়ক্ষতি ঘটেছে তা দ্রুত কাটিয়ে ওঠার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা যাতে কোমর সোজা করে দাঁড়াতে পারে, তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বিশেষ করে চরাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসনে ব্যাপক কর্মসূচি নেওয়া হবে- এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর