শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

জলবায়ু পরিবর্তন

জরুরি অবস্থা জারি অভিনন্দনযোগ্য

জলবায়ু পরিবর্তনে পৃথিবী নামের গ্রহজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণার প্রস্তাব পাস হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে। দুনিয়ার ২ শতাধিক দেশের মধ্যে বাংলাদেশই এ ধরনের একটি অনুকরণীয় প্রস্তাব নিল। কথায় বলে, গরজ আপন বালাই। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দুনিয়ার যেসব দেশ অস্তিত্বের সংকটের সম্মুখীন বাংলাদেশ তার মধ্যে সামনের কাতারে। জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের মানুষের কোনো ‘পাপ’ না থাকলেও কঠিন শাস্তির মুখোমুখি তারা। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী মূলত শিল্পোন্নত দেশগুলো। বায়ুম-ল দূষণের কারণে তারা পৃথিবীকে মানুষের বসবাসের অযোগ্য করে তুলছে। অথচ তাদের পাপের খেসারত দিতে হচ্ছে বাংলাদেশের মতো সাগরপাড়ের দেশগুলোকে। সাগরের জলরাশির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব দেশ ডুবে যেতে পারে এমন আশঙ্কার সম্মুখীন। এ প্রেক্ষাপটে জলবায়ু সংকটের বহুমাত্রিক সমস্যা থেকে বিশ্বের ৮০ ভাগ মানুষকে রক্ষায় সব দেশের পার্লামেন্ট, সরকার, জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাকে দ্রুত, কার্যকর ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অস্তিত্বের সংকট থেকে উত্তরণের জন্য ‘গ্রহজনিত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হোক’ শীর্ষক প্রস্তাব পাস করেছে জাতীয় সংসদ। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বুধবার সংসদের পঞ্চম অধিবেশনের বৈঠকে ১৪৭ বিধিতে আনা এ প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির পক্ষে কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী। প্রস্তাবটির বিশদ বর্ণনা দিতে সাবের হোসেন চৌধুরী সংসদে স্লাইড শো প্রদর্শন করেন। তিনি বলেন, আমরা হব পৃথিবীর প্রথম ও একমাত্র সংসদ যারা প্লানেটারি ইমারজেন্সি ঘোষণা করলাম। আমাদের আগামী দিনের রাজনীতি, কূটনীতিতে এ উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। পাশাপাশি জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্ল্যাটফরমে এটা উপস্থাপন করা সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্বব্যাপী যে আন্দোলন চলছে বাংলাদেশ তার নেতৃত্ব দিতে পারবে। সংসদে জলবায়ুসংক্রান্ত জরুরি অবস্থা ঘোষণার প্রস্তাব এমন একসময় পাস হলো যখন জলবায়ু দূষণের সবচেয়ে বড় হোতা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ ব্যাপারে কোনো দায় নিতে অস্বীকার করেছেন। মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তিতে ঢেকে দিয়েছেন লজ্জার কালো চাদর। বিশ্ববাসীকে নিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে আন্দোলন জোরদার হলে তা হবে এক বড় অর্জন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর