শনিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

সিরাজগঞ্জে ট্রেন দুর্ঘটনা

বেসরকারি খাতে হস্তান্তরের কথা ভাবুন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই ট্রেনের সংঘর্ষে বিপুলসংখ্যক হতাহতের রেশ না কাটতেই সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে ইঞ্জিনে আগুন লেগে তা ছড়িয়ে পড়ে তিন বগিতে। প্রাণহানি না ঘটলেও এ দুর্ঘটনায় অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে ঢাকা থেকে রংপুর এক্সপ্রেস ছেড়ে আসে। বেলা সোয়া ২টার দিকে উল্লাপাড়া রেলস্টেশনে পৌঁছার প্রায় ৩০০ গজ আগে লাইনের ত্রুটির কারণে ইঞ্জিনটি লাইনচ্যুত হয়ে উল্টে পড়ে যায়। এরপর পেছনের আটটি বগি লাইনচ্যুত হয়। ইঞ্জিনটি লাইনচ্যুত হওয়ার পরই তাতে আগুন ধরে। দ্রুত আগুন পেছনের তিনটি বগিতে ছড়িয়ে পড়ে। এতে চালকসহ প্রায় ১০ জন আহত হন। সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেড় ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আগুনে ইঞ্জিনসহ দুটি বগি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। দুর্ঘটনার পরই উল্লাপাড়া স্টেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনের সব স্টাফ ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, ট্রেনটি স্টেশনে ঢোকার আগমুহূর্তে বিকট শব্দে লাইনচ্যুত হয়ে আগুন ধরে যায়। কালো ধোঁয়া পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। যাত্রীরা আতঙ্কে ও ভয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন। হুড়োহুড়ি করে সবাই ট্রেন থেকে নেমে নিজেদের প্রাণ বাঁচান। ঐতিহ্য অনুযায়ী ট্রেন লাইনচ্যুৎ ও অগ্নিকান্ডের ঘটনার জন্য তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। অন্যান্য তদন্ত কমিটির মতো অশ্বডিম্ব ছাড়া বাংলাদেশ রেলওয়ে নামের ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানটির দ্বারা ভিন্ন কিছু প্রসব আমরা আশা করতে চাই না। আমাদের আশা, জাতির জন্য বোঝা ও বিরক্তি হিসেবে আবির্ভূত এই প্রতিষ্ঠানের পেছনে প্রতি বছর যে শত শত কোটি টাকার অপচয় ঘটছে তার অবসান হোক। আরব্য উপন্যাসের বাগদাদের চোরদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়া এই প্রতিষ্ঠানটি বেসরকারি খাতে অথবা বিদেশি ব্যবস্থাপনায় ছেড়ে দিয়ে লাগাতার লোকসান, অব্যবস্থা ও দুর্ঘটনার হাত থেকে দেশবাসীকে রেহাই দেওয়া যায় কিনা ভেবে দেখার সময় এসেছে। দুনিয়ার প্রায় সর্বত্র রেলওয়ে লাভজনক ও নিরাপদ হলেও আমাদের দেশে তা লোকসান ও

অনিরাপদ হয়ে থাকবে- তা মেনে নেওয়া উচিত নয়।

সর্বশেষ খবর