মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

সফর বিলাসিতা

মসলিন গবেষণার নামে প্রহসন নয় তো!

এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই তত্ত্বের অনুশীলনে ‘বাংলাদেশের সোনালি ঐতিহ্যের মসলিন তৈরির প্রযুক্তি ও মসলিন কাপড় পুনরুদ্ধার প্রকল্পের’ কর্তাব্যক্তিরা পিছিয়ে থাকবেন তা আশা করা উচিত হবে না। মসলিন কাপড়ের সুদিন ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার হাতে নিয়েছে এ প্রকল্পটি। মসলিন তৈরির উপযোগী তুলার জাত খুঁজতে এ প্রকল্পের পক্ষ থেকে ছয় কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে রাশিয়া ও মিসর সফরে। দৃশ্যত উদ্দেশ্যটি মহৎ হলেও ‘ডাল মে কুচ কালা হ্যায়’ তা উপলব্ধিতে আসে যখন জানা গেল ছয় মহামহিম কর্মকর্তার তিনজনই তুলাবিষয়ক গবেষক নন। অন্য এক কর্মকর্তা আগামী মাসের ১৫ তারিখে অবসরোত্তর ছুটিতে যাচ্ছেন। গবেষকদের মতে, ফুটিকার্পাস তুলা থেকে মসলিন তৈরি হতো। তারা বাংলাদেশে ছয় জাতের তুলার খোঁজ পেয়েছেন। তাদের ধারণা, এ ছয় জাতের মধ্যেই ফুটিকার্পাস আছে। প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দেশে উৎপাদিত তুলার জাতের মধ্যে মসলিন তৈরির জাত না পাওয়া গেলে বিদেশে যাওয়া যেতে পারে। কিন্তু দেশি তুলার জাত নিয়ে যথাযথ খোঁজ না নিয়েই বিদেশ ভ্রমণের ব্যবস্থা কতটা কাজের হবে আর কতটা সরকারি অর্থের অপচয় ঘটাবে তা বুঝতে কষ্ট হওয়ার কথা নয়। ২০১৮ সালের ১ জুলাই শুরু হওয়া প্রকল্পটি শেষ হবে ২০২১ সালের জুনে। প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কয়েকজন গবেষকের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনে বলা হয়েছে, রাশিয়া ও মিসরে এখন তুলার মৌসুম নয়। তারা যে কাজে এ দুটি দেশে যাচ্ছেন, তা ভারতে গিয়েও দেখতে পারতেন। নিয়ম অনুযায়ী অবসরোত্তর ছুটিতে যাওয়ার এক মাস আগে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ে ফিরে আসার কথা থাকলেও তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান তা এড়িয়ে গেছেন বিদেশ সফরের সুযোগ পেতে। মসলিন কাপড় বাংলাদেশের ঐতিহ্যের অংশ, অহংকারেরও অনুষঙ্গ বললে ভুল হবে না। মসলিন কাপড়ের সুদিন ফিরে আসুক তা সবারই কাম্য। তবে এ প্রকল্পের নামে বিদেশ ভ্রমণের যে মহোৎসব চলছে তাতে মূল উদ্দেশ্য নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। সাত দিনের সফরে যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে তা যেহেতু রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে দেওয়া হচ্ছে সেহেতু সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে নজর দিলেই ভালো করবেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর